Home » অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন না করার ফলাফল আলোচনা কর
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন না করার ফলাফল,

অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন না করার ফলাফল আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন না করার ফলাফল

নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় অপেক্ষা আইনত অধিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৬৯ ধারা অনুযায়ী একটি অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন না করার ফলে অংশীদাররা নিম্নোক্ত অসুবিধাগুলো ভোগ করে:

১. ব্যবসায় বা সহ-অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না: অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় এর কোনো অংশীদার তার অধিকার এবং অংশীদারি চুক্তি আইন বলবৎ করার জন্য অংশীদারি ব্যবসায় বা তার সহ-অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে না। [৬৯ (১) ধারা]

অংশীদারি ব্যবসায়ের উপাদান সমূহ আলোচনা কর

২. তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে না: অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় বা তার কোনো অংশীদার তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে চুক্তিজাত অধিকার আদায়ের জন্য মামলা দায়ের করতে পারে না। অথচ তৃতীয় পক্ষ এ অধিকার ভোগ করতে পারে। [৬৯ (২) ধারা]

৩. পাল্টা দাবি আদায়ে বাধা: তৃতীয় পক্ষ অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় থেকে বা কোনো অংশীদারের নিকট থেকে তার পাওনা আদায়ের অধিকার রাখে। কিন্তু অনিবন্ধিত ব্যবসায় বা কোনো অংশীদার পাল্টা পাওনা দাবি করতে পারে না। [৬৯ (৩) ধারা]

৪. পাওনা আদায়ে বাধা: অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় একশত টাকার অধিক পাওনা আদায়ের জন্য তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে না। [৬৯ (৪) ধারা]

৫. চুক্তির শর্ত মেনে চলার ক্ষেত্রে বাধা: অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদারগণ একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত মেনে চলার জন্য মামলা দায়ের করতে পারে না।

ব্যতিক্রম: অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে উপরোক্ত ৬৯ ধারার বিধানগুলোর কতগুলো ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেগুলো নিম্নরূপ:

১. অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলোপসাধনের জন্য এবং বিলুপ্ত ব্যবসায়ের হিসাব দাখিলের জন্য যে কোনো অংশীদার মামলা দায়ের করতে পারে। [৬৯ (৩ক) ধারা]

২. বিলুপ্ত অংশীদারি ব্যবসায় হতে সকল অংশীদার তাদের নিজ নিজ অংশ দাবি করে মামলা দায়ের করতে পারবে। [৬৯ (৩ক) ধারা]

৩. অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত না হলে বিলুপ্তির পর ব্যবসায়ের সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য মামলা দায়ের করা যায়। [৬৯ (৩ক) ধারা]

৪. কোনো অংশীদার বিশ্বাস ভঙ্গ করলে এরূপ ব্যবসায়ের অন্যান্য অংশীদারগণ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। [৬৯ ধারা]

৫. সরকারি তত্ত্বাবধায়ক বা আদালত কর্তৃক নিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক অনিবন্ধিত ব্যবসায়ের দেউলিয়া অংশীদারের সম্পত্তি উদ্ধার করতে পারবে। [৬৯ (৪খ) ধারা]

৬. অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদারগণ তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে একশত টাকা পর্যন্ত দাবি আদায়ের জন্য মামলা করতে পারবে এবং বাদীর বিরুদ্ধে একশত টাকা পর্যন্ত পাল্টা দাবিও করতে পারবে। [৬৯ (৪খ) ধারা]

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত অবস্থায় পরিচালিত হতে পারে। তবে অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধন করাই উত্তম। নিবন্ধন না করা হলে উপরোল্লিখিত ফলাফল ভোগ করতে হয়।

Related Posts