Home » জাতীয়তা কি | জাতীয়তা বলতে কি বুঝায় | জাতীয়তা কাকে বলে
জাতীয়তা কি, জাতীয়তা কাকে বলে, জাতীয়তা বলতে কি বুঝায়,

জাতীয়তা কি | জাতীয়তা বলতে কি বুঝায় | জাতীয়তা কাকে বলে

by Susmi
0 comment

জাতীয়তার ধারণা রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কিত। অলিভার ভঙ্ক (Olivier Vonk- Director of Research Future Citizen Institute, Netherlands) মনে করেন- ‘জাতীয়তা হচ্ছে একজন ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রের মধ্যকার আইনী কখন’। জাতীয়তা দ্বারাই ব্যক্তি রাষ্ট্রের কাছ থেকে সুরক্ষা লাভ করে।

জাতীয়তা হলো মানসিক ধারণা, চেতনা, মনন ও চিন্তার সমন্বয়, যা কোনো গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যবোধ তৈরি করে। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে জাতীয়তা হচ্ছে, জন্মসূত্রে ঐক্যবদ্ধ একটি জনসমষ্টির চেতনাবোধ। জাতীয়তা সেই জনসমষ্টিকে নির্দেশ করে যারা একই বংশ, ভৌগোলিক অবস্থান, ভাষা, সাহিত্য, আদর্শ, ঐতিহ্য, আচার ও রীতিনীতি দ্বারা ঐক্যবদ্ধ।

আমলাতন্ত্রের ত্রুটি গুলো কি কি?

জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) লিখেছেন, ‘মানবসমাজের সে অংশ জাতীয়তায় পরিণত হয় যারা এমন এক সহানুভূতির সূত্রে আবদ্ধ, যা অন্য কোথাও দৃষ্ট হয় না এবং যারা একই সরকারের অধীনে থাকতে ইচ্ছা পোষণ করে।’

লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) বলেন, ‘জাতীয়তা হলো ভাষা ও সাহিত্য, চিন্তা, প্রথা ও ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ একটি জনসমষ্টি যা অনুরূপ বন্ধনে আবদ্ধ অন্যান্য জনসমষ্টিকে নিজেদের থেকে পৃথক মনে করে।’

অধ্যাপক গার্নার (Prof. Garner)-এর মতে, ‘জাতীয়তা হচ্ছে একটি ভাবগত বিষয়, একটি মানসিক অবস্থা, জীবনযাত্রা, চিন্তা এবং অনুভূতির একটি পদ্ধতি।’ ফরাসি দার্শনিক রেনান (Renan) যথার্থই বলেছেন, ‘জাতিয়তা একটি মানসিক সত্তা, এটি একপ্রকার সজীব মানসিকতা।’

হ্যান্স কোন (Hans Kohn) তার ‘The Idea of Nationalism’ গ্রন্থে বলেন- ‘জাতীয়তাবাদ মূলত এক মানসিক অবস্থা এবং এক প্রকার সচেতনতা’।

অধ্যাপক হ্যারন্ড জে লাস্কির (Harold Joseph Laski) মতে- ‘জাতীয়তা একটি ঐক্যবোধের পরিচায়ক। এর অংশীদাররা বাকি মানব সমাজ হতে স্বতন্তরূপে চিহ্নিত হয়।

কোনো জনসমষ্টি যখন একই ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে বসবাস করে এবং নিজেদের মধ্যে বংশগত, ধর্মগত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যগত ঐক্যভাব প্রতিষ্ঠা করে তখন তাদের মধ্যে যে একাত্মবোধের জন্ম হয় তারই এক সাবলীল প্রকাশ হলো জাতীয়তা।

আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

সুতরাং জাতীয়তা মূলত মানসিক ব্যাপার। এটি জনগণের মানসিকতা থেকে উৎসারিত। একটি জাতীয় জনসমাজ কেবল রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে জাতিতে পরিণত হতে পারে। কাজেই জাতীয়তার সঙ্গে রাজনৈতিক সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। উপরের সংজ্ঞাসমূহের আলোকে বলা যায়, জাতীয়তা হচ্ছে এমন একটি মানসিক ধারণা, মনন ও চিন্তার এক অবস্থা যা কোনো জনসমষ্টির নিজেদের মধ্যে ঐক্যবোধ গড়ে তোলে এবং অন্যান্য জনসমষ্টি থেকে আলাদা করে।

উনিশ ও বিশ শতকে বিশ্বের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়। ফলে বড় বড় সাম্রাজ্য ও উপনিবেশ ভেঙে বহু জাতিরাষ্ট্রের জন্ম হয়। জাতীয়তাবাদের ধারণাটি একদিকে যেমন একটি জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জাতিসত্ত্বাবোধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে, তেমনি একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকার অধিবাসীদের সম্মিলিত মূল্যবোধের ওপরও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

Related Posts