Home » ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক নীতিমালা আলোচনা কর
ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক নীতিমালা আলোচনা কর,

ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক নীতিমালা আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক নীতিমালা সমূহ

ব্যবসায় সংগঠনের আকার ও প্রকৃতি যাই হোক না কেন, এর সাফল্য নির্ভর করে প্রধানত এ সংগঠনের মৌলিক উপাদান বা নীতিগুলোর সুবিন্যস্ততার উপর। নিম্নে আদর্শ ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক উপাদান বা নীতিমালা গুলো আলোচনা করা হলো:

১. উদ্দেশ্য ও কর্মপ্রণালি নির্ধারণ

ব্যবসায় সংগঠন করার আগেই ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য ও কর্মপ্রণালি সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়। পরবর্তীকালে ঐ পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসায়ের যাবতীয় কার্য সংঘটিত ও পরিচালিত হয়। অতএব অত্যন্ত স্পষ্ট ও বাস্তবতার ভিত্তিতে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য ও কর্মপ্রণালি নির্ধারণ করতে হবে। অধিকন্তু উদ্দেশ্য বিস্তারিত হওয়া উচিত।

২. কার্যবিভাগীকরণ ও কার্যভিত্তিক কর্তব্য বণ্টন

আধুনিক ব্যবসায় সংগঠনের অন্যতম প্রধান নীতি হলো কার্যের বিভাগীকরণ এবং ব্যক্তির পরিবর্তে কর্মগুলোকে কার্যের গুরুত্বের ভিত্তিতে বণ্টন করে দেয়া। এতে অযথা সময় ও শ্রমশক্তির অপচয় হয় না। অধিকন্তু সুশৃঙ্খলভাবে প্রত্যেকে প্রত্যেকের দায়িত্ব দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারে। ফলে উৎপাদন খরচ কম হয়।

প্রত্যক্ষ সেবা কি? প্রত্যক্ষ সেবার বৈশিষ্ট্য ‍কি কি?

৩. সমন্ধাসাধন ও সমতা রক্ষা

ব্যবসায়ের প্রতিটি বিভাগের কাজের ও নীতির মধ্যে সমন্বয় সাধন ও সমতা রক্ষা করা ব্যবসায়ের সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। সংগঠককে লক্ষ রাখতে হবে যাতে এক বিভাগের কাজের জন্য অন্য বিভাগের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং সকল বিভাগের মধ্যে সমতা বজায় থাকে।

৪. দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা

ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা নীতির উপর ব্যবসায়ের সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ভর করে। দক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা নীতি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এতে শ্রম ও অর্থের কম অপচয় হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সহজ হয়।

৫. সহযোগিতা

ব্যবসায়ের সাফল্য নির্ভর করে এর শ্রমিক-কর্মী ও মালিকদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্কের উপর। যে ব্যবসায়ের শ্রমিক-কর্মী ও ব্যবস্থাপক বা মালিকের মধ্যে অধিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকে সে ব্যবসায় তত বেশি সাফল্য লাভে সক্ষম হয়।

৬. আদেশের মিল বা ঐক্য

প্রতিষ্ঠানের কাজের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে অধস্তন কর্মচারীগণকে উপরস্থ অফিসারগণ আদেশ বা নির্দেশ দেয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করবেন যাতে একই সময় দ্বৈত আদেশ দেয়া না হয়। এ অসুবিধা দূর করার জন্য প্রতিষ্ঠানে আদেশ দেয়ার একটা সুশৃঙ্খল নীতি থাকতে হবে।

৭. নমনীয়তা

ব্যবসায়ের নির্দেশ বা নীতি পদ্ধতি যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মিল রেখে পরিবর্তন করা যায় সে ব্যবস্থা সংগঠনে থাকতে হবে।

৮. পুঁজি

সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি সরবরাহ করা ব্যবসায় সংগঠনের অন্যতম প্রধান নীতি। কেননা পুঁজির স্বল্পতা বা আধিক্য উভয়ই ব্যবসায়ের জন্য ক্ষতিকর।

সামাজিক ব্যবসায় কি? সামাজিক ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ কেন?

৯. মিতব্যয়িতা

ব্যবসায় সংগঠনের অন্যতম নীতি হলো প্রতিক্ষেত্রে মিতব্যয়িতার মাধ্যমে মুনাফা বৃদ্ধি করা।

১০. সংগঠন কাঠামোর সরলতা

ব্যবসায়ের সংগঠন কাঠামো যথাসম্প সরলভাবে তৈরি করতে হবে। জটিল সংগঠন কাঠামো ব্যবসায়ের ব্যবস্থাপনা কার্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।

১১. গবেষণা

আধুনিক জটিল ও প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় সংগঠনের অন্যতম উপাদান হলো প্রতি বিষয়ে পূর্ব পরিকল্পনা এবং সে বিষয়ে গবেষণা করা। এটা ব্যবসায়ের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে এবং সাফল্য অধিক নিশ্চিত করে।

মোটকথা, আধুনিক বৃহৎ আয়তন ব্যবসায় সংগঠনের সাফল্যের চাবিকাঠি হলো এর সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত নীতিমালা বা উপাদানসমূহ এবং এদের সুচিন্তিত বাস্তবায়ন। অতএব যথেষ্ট সতর্কতা ও নিপুণতার সাথে সংগঠনের নীতিমালা তৈরি করতে হবে।

Related Posts