Home » রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকারভেদ আলোচনা কর
রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকারভেদ

রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকারভেদ আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকারভেদ

রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সরকার, অধিকার, দায়-দায়িত্ব প্রভৃতি সম্পর্কে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে Almond ও Verba তাদের ‘The Civic Culture’ গ্রন্থে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করেছেন। যথা-

ক, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি;

খ. অধীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি;

গ. অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি কি | রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংজ্ঞা দাও

ক. সংকীর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি

যেখানে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা সরকার, সরকারের ভূমিকা, তার নিয়মনীতি এবং নিজের ভূমিকা অথবা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে অসচেতন, সেখানকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংকীর্ণ। অর্থাৎ, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির মূল বৈশিষ্ট্য হলো জাতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও জীবন সম্পর্কে জনগণ সচেতন নয়। সনাতন সমাজব্যবস্থা এবং এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে। এরূপ সংস্কৃতিতে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে উদাসীন থাকে। জনগণের ধ্যানধারণা এবং জ্ঞান সীমিত থাকে।

খ. অধীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি

যেখানে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সরকারি নিয়মনীতি প্রভৃতি সম্পর্কে সচেতন, তবে দাবি পেশ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সদস্য হিসেবে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে উদাসীন, সেখানকার রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে অধীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলা যায়। এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে জনগণের সম্পর্ক নিষ্ক্রিয়। এখানে জনগণ সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন হলেও তা সীমিত পর্যায়ে। কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে জনগণ আগ্রহী নয়। এরূপ সংস্কৃতিতে জনগণের একটি বড় অংশ সরকারের সিদ্ধান্তকে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে মনে করে। তাই এ ব্যাপারে জনগণ তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করে না।

রাজনৈতিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর

গ. অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

যেখানে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সরকার, দাবিদাওয়া, সরকারি সিদ্ধান্ত ও নিয়মনীতি এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার সদস্য হিসেবে নিজের অধিকার ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন সেখানকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি অংশগ্রহণমূলক। উন্নত সমাজগুলোতে এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি লক্ষণীয়। এরূপ সমাজে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সক্রিয় সদস্য হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির এ ত্রিমুখী শ্রেণিবিন্যাস সম্পূর্ণ নয়। কেননা কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায়ই প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা, কর্মকাণ্ড ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কে সমান দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায় না। সুতরাং সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, রাজনৈতিক, সংস্কৃতির মুখ্য তিনটি শ্রেণির কোনোটিই একটি ব্যবস্থায় এককভাবে উপস্থিত থাকে না। ফলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির এ ত্রিমুখী শ্রেণিবিন্যাসকরণ পর্যাপ্ত নয়। কাজেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো মিশ্র প্রকৃতির। এ সংস্কৃতিকে Almond ও Verba মিশ্র রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা মিশ্র রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন।

অতএব, আপনারা উপরের আলোচনা থেকে রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে পারলেন।

Related Posts