আমলাতন্ত্রের ত্রুটি
সকল সিস্টেমের কিছু না কিছু অসুবিধা বা ত্রুটি থাকে। আমলাতন্ত্রের সিস্টেমটাও তার বাইরে নয়। এর বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। নিম্নে আমলাতন্ত্রের ত্রুটি গুলো তুলে ধরা হলো-
১. দীর্ঘসূত্রিতা
দীর্ঘসূত্রিতা আমলাতন্ত্রের একটি বড় ত্রুটি। আমলারা যেকোনো কাজে অযথা কালক্ষেপণ করে কাজের গতি কমিয়ে দেয়। যার ফলে জনগণ প্রত্যাশিত সেবা পায় না। এতে তারা হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হয়।
আমলাতন্ত্র কি | আমলাতন্ত্র কাকে বলে | আমলাতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও |
২. উদাসীনতা
আমলাতন্ত্রের অন্যতম ত্রুটি হলো জনস্বার্থ সম্পর্কে উদাসীনতা। জনগণের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমলাতন্ত্রের হলেও তারা জনগণের অভাব অভিযোগ সম্পর্কে উদাসীন থাকে।
৩. রক্ষণশীলতা
আমলারা অতিমাত্রায় রক্ষণশীল প্রকৃতির। তারা তাদের পূর্ববর্তীদের ঐতিহ্য রক্ষা করে চলে। আমলারা উচ্চস্তরের নির্দেশ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তাদের এই রক্ষণশীলতা জনগণের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়।
৪. জনবিচ্ছিন্নতা
আমলারা নিজেদেরকে জনগণ থেকে আলাদা ভাবার কারণে জনগণের সাথে তাদের কোনো সংযোগ থাকে না। জনসেবাকে অগ্রাধিকার না দিয়ে আনুষ্ঠানিকতার নামে সরকারি আদেশ-নিষেধ, নিয়ম-নীতির প্রতি অবিচল থাকার কারণে তারা সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
৫. লালফিতার দৌরাত্ম্য
লালফিতার দৌরাত্ম্য আমলাতন্ত্রের অন্যতম ত্রুটি। বস্তুত কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত বা উদ্যোগ গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতার সংস্কৃতিই লালফিতার দৌরাত্ম্য হিসেবে পরিচিত’। লালফিতার দৌরাত্ম্য প্রশাসনে স্থবিরতা সৃষ্টি করে। ফলে জনস্বার্থ উপেক্ষিত হয় এবং জনকল্যাণ ব্যাহত হয়।
৬. অহংবোধ
আমলাতন্ত্র শিক্ষিত, মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। তাই তারা নিজেদেরকে সাধারণ মানুষের চেয়ে উচ্চ পর্যায়ের ভাবেন। এই অহংবোধ তাদেরকে একধরনের অভিজাত শ্রেণিতে পরিণত করে। এর ফলে আমলারা সাধারণ মানুষ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন থাকেন।
৭. জনকল্যাণের পরিপন্থী
উন্নয়নশীল দেশে আমলাতন্ত্র জনকল্যাণের বিরোধী হিসেবে কাজ করে। ঔপনিবেশিক দেশসমূহে জনগণকে শাসন করার কাজে আমলাতন্ত্র বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে আমলাতন্ত্র জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে তাদের অহমিকা দ্বারা জনগণকে হয়রানি করে থাকে।
আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি? |