Home » ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লিখন
ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লিখন

by Susmi
0 comment

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি বা রচনা লেখার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্ন এসে থাকে। এই আর্টিকেলটি শেখার মাধ্যমে তোমরা অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবে। চলো তবে জেনে নিই একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কিভাবে লিখতে হয়? এখানে আমি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো।

আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য বাংলায়

ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

বাংলার প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রীষ্মের ছুটিতে সবাই এমন একটি জায়গায় বেড়াতে যাব। এই ভ্রমণের জন্য আমরা বেছে নিলাম ‘পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার’ বা ‘সোমপুর বিহার’কে। ইতিহাসে সভ্যতা, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও শিল্প ভাস্কর্যের গৌরবের জাজ্বল্যমান সাক্ষী হয়ে যে কয়টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে তাদের মধ্যে পাহাড়পুর বিহার অন্যতম। পাল আমলে এই এলাকার নাম ছিল সোমপুর। ১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। একে পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করেছিলেন।

আমরা খুব ভোরে ঢাকা হতে নওগাঁ শহরে রওনা হলাম। নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে আমরা সেই ঐতিহাসিক ও কাঙ্ক্ষিত জায়গা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে গিয়ে পৌঁছলাম। আমরা বিহারটি ঘুরে দেখা শুরু করলাম। প্রথমেই চোখে পড়ল এর ভূমি পরিকল্পনা। এর ভূমি পরিকল্পনা চতুষ্কোণাকার। উত্তর ও দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ১৭৩.৭ মিটার এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৪৭.১৫ মিটার। এর চারদিকে চওড়া সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল বরাবর অভ্যন্তরভাগে সারিবদ্ধ ছোটো ছোটো কক্ষ ছিল। উত্তর দিকের বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ। এই কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে। প্রতিটি মেঝে বিছানো ইটের ওপর পুরু সুরকি দিয়ে অত্যন্ত মজবুতভাবে তৈরি করা হয়েছিল। কক্ষগুলোর প্রতিটিতে দরজা আছে। বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর রয়েছে প্রধান ফটক। বিহারের অন্তর্বর্তী স্থানের উন্মুক্ত চত্বরের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। এছাড়া রয়েছে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ। বিহারের দক্ষিণে একটি মঞ্চে অনেকগুলো স্নানাগার ও শৌচাগার রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে সন্ধ্যাবতীর ঘাট। স্নানঘাট থেকে ১২ মিটার পশ্চিমে রয়েছে একটি গন্ধেশ্বরীর মন্দির।

নিজের সম্পর্কে ৫ টি বাক্য বাংলায় লেখা

এরপর আমরা গেলাম পাহাড়পুরসংলগ্ন জাদুঘরে। সেখানে দেখলাম বিভিন্ন ধরনের মূর্তি যেমন- বেলে পাথরের চামুণ্ডা মূর্তি, লাল পাথরের দণ্ডায়মান শীতলা মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের শিবলিঙ্গ, বেলে পাথরের মনসা মূর্তি প্রভৃতি। বিষয়গুলো আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো কত উন্নত, তা এই পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ঘুরে আমরা বুঝতে পারলাম।

তো কেমন লাগলো আমার ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা? তুমি যদি কোনো ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণ করে থাকো, তবে নিজের ভাষায় তা লিখতে পারো। অথবা, আজ পর্যন্ত যদি কোথাও না গিয়ে থাকো, তবে আমার লেখা এই অভিজ্ঞতাটি পরীক্ষায় লিখতে পারবে।