Home » ব্যবসায়ের অবস্থান বলতে কি বুঝায়, কত প্রকার ও কি কি?
ব্যবসায়ের অবস্থান বলতে কি বুঝায়, ব্যবসায়ের অবস্থান কত প্রকার ও কি কি,

ব্যবসায়ের অবস্থান বলতে কি বুঝায়, কত প্রকার ও কি কি?

by Susmi
0 comment

ব্যবসায়ের অবস্থান

যেকোনো ব্যবসায় বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অবস্থান বলতে এর গঠন ও পরিচালনার জন্য যে নির্দিষ্ট স্থানের প্রয়োজন হয় সেই স্থানকে বুঝায়। ব্যবসায় জগতে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন রয়েছে। এদের আকার ও আকৃতি এক নয়, কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আছে যার অবস্থান কেন্দ্রীভূত থাকে। এগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসে তাদের শাখার মাধ্যমে কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। আবার ব্যাংক, বিমা, পরিবহন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা খুলে তার ব্যবসায়ী কার্যকলাপ পরিচালনা ও ‘নিয়ন্ত্রণ করে থাকে যা একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থিত। এ ব্যবসায়ের কাজকর্ম ও সফলতা-ব্যর্থতা অবস্থানের উপর নির্ভর করে। তাই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অবস্থান নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এজন্য ব্যবসায় শুরুর পূর্বে অনেক চিন্তাভাবনা করে এর স্থান নির্বাচন করা উচিত। কোনো অঞ্চলের সমুদ্র বন্দর বা নদী বন্দর গড়ে উঠার সাথে যেমন পশ্চাৎ ভূমির অবস্থান থাকে তেমনি ব্যবসায়ের অবস্থানের পিছনে সন্নিহিত এলাকার সম্পর্ক থাকে। কোনো এলাকার ক্রেতাসাধারণের উপস্থিতির পাশাপাশি শ্রমিক, কাঁচামাল, যাতায়াত, পরিবহন, শক্তিসম্পদ ইত্যাদি বিষয়গুলো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখে।

সংগঠনের সংজ্ঞা দাও | সংগঠনের উদ্দেশ্য কি কি

ব্যবসায়ের প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য পরিচালনা কার্যালয়কে নিয়েই ব্যবসায়ের অবস্থান। অর্থাৎ ব্যবসায়ের গঠন ও পরিচালনার জন্য যে নির্দিষ্ট স্থানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে ঐ স্থানকেই ব্যবসায়ের অবস্থান বলে।

ব্যবসায়ের অবস্থান কত প্রকার ও কি কি?

ব্যবসায়ের প্রকৃতি, আয়তন, উপাদান এবং বৈশিষ্ট্যের আলোকে ব্যবসায়ের অবস্থানকে নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

(ক) শহুরে অবস্থান

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় শহরের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত থাকে। শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য উন্নত যোগাযোগ অপরিহার্য। এতে শিল্পের জন্য কাঁচামাল শিল্প শ্রমিকদের যাতায়াত ও উৎপাদিত পণ্যদ্রব্যাদি পরিবহনে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এজন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অধিকাংশ ক্ষেত্রে শহরাঞ্চলে গড়ে ওঠে। তাছাড়া শহরের মানুষের আয় বেশি তাই তাদের সঞ্চয় প্রবণতাও বেশি থাকে। সঞ্চিত অর্থ ব্যবসায়ের মূলধন হিসেবে আসে। কারণ শহরে অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয় করে প্রচুর মূলধন সংগ্রহ করা সহজ হয়। এ সকল সুবিধা বিবেচনা করে ব্যবসায়ের অবস্থান শহরে নির্ধারণ করা হয়।

(খ) গ্রাম্য অবস্থান

গ্রামে শহরের তুলনায় জমির মূল্য কম। গ্রামে সেজন্য শিল্প-কলকারখানা স্থাপনের জন্য কম দামে প্রচুর জমি পাওয়া যায়। খরচ কম হওয়ায় গ্রামে অবস্থিত শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম কম হয়। এছাড়া শহরের তুলনায় গ্রামে খরচ কম হয়। গ্রামে বিশুদ্ধ পানি বিনামূল্যে পাওয়া যায় বলে সুলভে তা কলকারখানার সব কাজে ব্যবহার করা যায়। গ্রামে শিল্প-কারখানা কম থাকায় পণ্য উৎপাদন কম হয় বিধায় প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের মধ্যে প্রতিযোগিতাও কম হয়। সেজন্য বেশি লাভে পণ্য বিক্রি করা যায়। বসবাসকারী লোকজনও গ্রামে স্থায়ীভাবে থাকে তাই তাদেরকে শিল্পে নিয়োগ করলে ভালো কাজ আশা করা যায় এবং ব্যবসায়ের জন্যও মঙ্গলজনক হয়।

ব্যবসায় সংগঠনের গুরুত্ব আলোচনা কর

(গ) শহরতলিতে অবস্থান

শহরতলিতে সাধারণ লোকের ঘনবসতি বেশি থাকে। এখানে শ্রমিক চাহিদা অনুসারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। এখানে উৎপাদিত দ্রব্যের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। তাই তুলনামূলকভাবে ক্রেতাদের সমাগম বেশি থাকে এবং বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় বেশি হয়। ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সফলতা সহজেই অর্জন করা যায়। এজন্য শহরতলিতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। খুচরা যন্ত্রাংশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা ইত্যাদি তুলনামূলকভাবে শহরতলিতে অধিক পরিমাণে গড়ে ওঠে।

উপসংহার

ব্যবসায়ের জন্য যে অঞ্চল অধিক সুবিধাজনক সেখানেই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হতে পারে। ব্যবসায় বা শিল্প প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী তার সুবিধাজনক ও উপযোগী অবস্থান অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে উপরিউক্ত যেকোনো অবস্থান নির্বাচন করতে পারে।

Related Posts