ব্যবসায় সংগঠনের প্রকারভেদ
মানুষের বিভিন্ন প্রকার চাহিদা পূরণার্থে যুগে যুগে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও মালিকানার ভিত্তিতে নিম্নোক্ত ধরনের ব্যবসায়গুলো গড়ে উঠেছে। এদের একটির সাথে অন্যটির উদ্দেশ্যগত কিছুটা মিল থাকলেও বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি, আয়তন, কার্যক্ষেত্র, মালিকানা ইত্যাদির যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
ভবিষ্যতে ব্যবসায় সাফল্য লাভ করতে হলে উদ্যোক্তাকে প্রথমেই তার পছন্দমতো ব্যবসায় সংগঠনটি বেছে নিতে হবে। উপযুক্ত ব্যবসায় সংগঠন নির্ধারণের উপাদানগুলোর মধ্যে পরিচালনা ক্ষমতা, মূলধন সরবরাহের পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণকারী আইনকানুন, মুনাফা অর্জনের সঞ্চাবন্য প্রভৃতি প্রধান।
সামাজিক ব্যবসায় কি? সামাজিক ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ কেন? |
আধুনিক জনপ্রিয় ব্যবসায় সংগঠনগুলো হচ্ছে:
১. একমালিকানা ব্যবসায়;
২. অংশীদারি ব্যবসায়;
৩. যৌথ মূলধনী ব্যবসায়;
৪. সমবায় ব্যবসায়;
৫. ব্যবসায়ী জোট ও
৬. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়।
১. একমালিকানা ব্যবসায়
যে ব্যবসায়ে একজন মাত্র মালিক থাকে এবং সে নিজে ব্যবসায় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে তাকে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। এ ব্যবসায়ের সমুদয় লাভ-লোকসান মালিক একা ভোগ করে। এর যাবতীয় দায়িত্বও তার একার। এটা সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় বাবসায় সংগঠন।
২. অংশীদারি ব্যবসায়
মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে অথবা সকলের পক্ষে একজন ব্যবসায় পরিচালনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে একাধিক ব্যক্তি যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। এর সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে দুইজন এবং সর্বোচ্চ বিশজন হবে। ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে দশজন। চুক্তিবলে সৃষ্ট সম্পর্ককে অংশীদারি এবং প্রত্যেক সদস্যকে পৃথকভাবে অংশীদার বলা হয়। চুক্তি এর প্রধান শর্ত।
৩. যৌথ মূলধনী ব্যবসায়
যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা উদ্দেশ্যাবলি অর্জনের জন্য কতিপয় ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সম্মিলিতভাবে মূলধন সরবরাহ করে, সীমিত দায়ের ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনা করে তাকে যৌথ মূলধনী কোম্পানি বলে।
৪. সমবায় ব্যবসায়
সমবায় আইনের বিধান অনুযায়ী সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কতিপয় ব্যক্তি পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমে যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে সমবায় ব্যবসায় বলে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিজেদের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি।
ব্যবসায় সংগঠনের মৌলিক নীতিমালা আলোচনা কর |
৫. ব্যবসায়ী জোট
একচেটিয়া ব্যবসায় করার উদ্দেশে একই ধরনের একাধিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ব্যবসায় পরিচালনাকে ব্যবসায়ী জোট বলে। এর প্রধান উদ্দেশ হলো নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বন্ধ করে বাজারে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জন।
৬. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এবং মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়কে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় বলে। জাতীয়করণের মাধ্যমেও ব্যবসায়কে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আনা যায়।
আশাকরি, উপরের আলোচনা থেকে আপনারা ব্যবসায় সংগঠনের প্রকারভেদ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন।