Home » একমালিকানা ব্যবসায়ের ‍গুরুত্ব গুলো কি কি?
একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব,

একমালিকানা ব্যবসায়ের ‍গুরুত্ব গুলো কি কি?

by Susmi
0 comment

একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব

ব্যবসায় জগতে একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব অত্যধিক। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বৃহদায়তন উৎপাদনের যুগে একমালিকানা ব্যবসায়ের কতগুলো বিশেষত্বের কারণে সর্বজনের স্বীকৃতি লাভ করেছে। বস্তুত ক্ষুদ্রায়তনের ব্যবসায় হলেও আধুনিককালে একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নিম্নে একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব গুলো আলোচনা করা হলো-

১. জীবিকা নির্বাহ

একমালিকানা ব্যবসায়ে যে কোনো স্বাধীনচেতা ব্যক্তি নিজের সাধ্যমতো পুঁজি নিয়ে যে কোনো সুবিধাজনক স্থানে গঠন করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।

একমালিকানা ব্যবসায় কাকে বলে? একমালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

২. স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়

এরূপ ব্যবসায় গঠন করতে অধিক পুঁজির প্রয়োজন হয় না। তাই সামান্য পুঁজি নিয়ে স্বল্প পুঁজিপতিগণ নিজ উদ্যোগে একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করে ব্যবসায়িক কর্মকান্ডকে প্রসারিত করতে পারেন।

৩. প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার

একমালিকানা ব্যবসায় দেশের অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, ভূমিকা পালন করে। এ ব্যবসায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে শিল্পের উৎপাদন কার্যে ব্যবহৃত কাঁচামাল সংগ্রহ ও সরবরাহ করে প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে।

৪. উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বণ্টন

উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী উৎপাদন স্থান হতে ভোক্তা বা ব্যবহারকারীদের নিকট পৌঁছানো পর্যন্ত কর্মকাণ্ডে একমালিকানা ব্যবসায় অধিক উপযোগী। ফলে জটিল ব্যবসায় ক্ষেত্রে উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বণ্টন সহজতর হয়।

৫. মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি

একমালিকানা ব্যবসায় হলো ক্ষুদ্রায়তনের স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়। ফলে মানুষ তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একমালিকানা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে সম্ময়ের সদ্ব্যবহার হয় ও মূলধনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৬. অবস্থানগত সুবিধা

এরূপ ব্যবসায় শহরে, গ্রামে-গঞ্জে, পাড়ায়-মহল্লায় বা জনবহুল স্থানে গড়ে উঠে। ফলে ভোক্তা বা ক্রেতাগণ সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যটি পেতে পারেন।

৭. কর্মসংস্থান

স্বল্প পুঁজির একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করে অনেকে নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নেন এবং অন্যদের বেতনভোগী কর্মচারী নিয়োগ করে বেকার সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

৮. পণ্যের কৃত্রিম সংকট রোধ

উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী অল্প সময়ে ও অল্প খরচে ভোক্তাদের নিকট পৌঁছে দিয়ে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি রোধের ক্ষেত্রে একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

৯. অব্যাহত উৎপাদন

উৎপাদিত পণ্যদ্রব্যের কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য ভোক্তাদের নিকট পৌঁছে দিয়ে একমালিকানা ব্যবসায় উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১০. পণ্যদ্রব্যের চাহিদা সৃষ্টি

একমালিকানা ব্যবসায়ের মাধ্যমে নতুন পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি হয়। উৎপাদক প্রতিষ্ঠানে কোনো নতুন পণ্য উৎপাদিত হলে তার বেশির ভাগ পণ্য একমালিকানা ব্যবসায়ের মাধ্যমে ভোগ্যস্থানে পৌঁছায়। সুতরাং নতুন উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা সৃষ্টিতে একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

১১. একচেটিয়া প্রভাব হ্রাস

বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দেশেই একমালিকানা ব্যবসায়ের সংখ্যা সর্বাধিক। ফলে অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া প্রভাব অনেকাংশে হ্রাস পায়; যা দেশ তথা সমাজের জন্য মঙ্গলজনক।

১২. স্বল্প পরিচালনা ব্যয়

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একমালিকানা ব্যবসায় ক্ষুদ্রায়তনের। ফলে প্রায়ই কোনো বেতনভোগী কর্মচারী নিয়োগ দিতে হয় না এবং মালিককে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নামে পৃথক কোনো কর দিতে হয় না বলে এরূপ প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ব্যয় কম হয়।

১৩. নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়

একমালিকানা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পণ্য থাকে। এগুলো সমাজে বসবাসরত মানুষ ক্রয় করে তাদের চাহিদা মেটাতে পারেন।

১৪. ব্যবসায় বাণিজ্যের উন্নয়ন

একমালিকানা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে উদ্যোক্তা উন্নয়নের প্রাথমিক সোপান বলা হয়। এ ব্যবসায় থেকে ব্যবসায়ী অভিজ্ঞতা অর্জন করে বৃহদায়তনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যবসায় বাণিজ্যের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একমালিকানা ব্যবসায়ের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা কর

১৫. জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন

একমালিকানা ব্যবসায়ের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কর্মসংস্থান হয় এবং ভোক্তাদের চাহিদা, রুচি, ফ্যাশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের যোগান দিয়ে জীবনযাত্রাকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।

১৬. জাতীয় আয় বৃদ্ধি

একমালিকানা ব্যবসায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের গতি অব্যাহত রাখে, বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। ফলে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়, যা জাতীয় সম্পদ ও আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উপসংহার

সুতরাং বলা যায় যে, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে বিভিন্ন ধরনের বৃহদায়তন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠা সত্ত্বেও ক্ষুদ্রায়তন একমালিকানা ব্যবসায়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আধুনিককালের ব্যবসায় বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন একমালিকানা ব্যবসায় ছাড়া সম্ভব নয়।

Related Posts