Home » শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

by Susmi
0 comment

শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য সমূহ

শিল্পনির্ভর সমাজ পূর্ববর্তী সকল সমাজব্যবস্থার চেয়ে স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়। নিচে শিল্প সমাজের বৈশিষ্ট্য সমূহ উপস্থাপন করা হলো-

১। শিল্প সমাজ আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে। সামন্ততান্ত্রিক সমাজের অর্থব্যবস্থা থেকে শিল্প সমাজকে পৃথক করতে শিল্প সমাজ পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিকাশ করেছে।

২। শিল্পের সাহায্যে অধিক উৎপাদন সম্ভব হয়। অধিক উৎপাদন শিল্প সমাজকে দ্রুত উন্নতির পথে পরিচালিত করে।

৩। শিল্প সমাজের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও কলাকৌশল অপেক্ষাকৃত উন্নত এবং জটিল। মানুষ এ যুগে এসে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন করে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ জীবনে স্বচ্ছন্দ ও বৈচিত্র্য আনয়ন করে।

৪। শিল্প সমাজে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠে অসংখ্য ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। শিল্প প্রতিষ্ঠানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান ঘটে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে মানুষ মেধার বিকাশ ঘটায়।

ইংলিশে দুর্বলদের জন্য: সাইফুল ইসলাম - Englishe durbolder jonno English  Therapy: Saiful Islam

TK. 499

৫। শিল্প সমাজ শক্তির উপর নির্ভরশীল। জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে এ সমাজ পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ, কয়লা প্রভৃতি ব্যবহার করে। ফলে জীবনযাপন অনেক সহজ হয়।

৬। শিল্পায়নের ফলে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। সমাজে বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবী কর্মক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। মানুষের পেশাগত জীবনে বৈচিত্র্য আসে। সমাজে বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবী সামাজিক শ্রেণির উদ্ভব ঘটে।

৭। ইউরোপীয় দেশসমূহে সামরিক শক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যদিয়ে সমগ্র পৃথিবীতে সাম্রাজ্য বিস্তারে সক্ষম হয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ নিজেদের স্বার্থে পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নিজেদের সভ্যতার ব্যাপক প্রসার ঘটায়।

৮। শিল্প সমাজে এসে মানুষ রাজতন্ত্রের বিলোপ ঘটায়। বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্রের চর্চা ক্রমশ ব্যাপকতা পেতে শুরু করে।

৯। শিল্প সমাজে এসে মানুষের চিন্তাচেতনা, আচার-আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা, কুসংস্কার থেকে মানুষ দূরে সরে আসে। ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাচেতনার সূত্রপাত হয় এবং মানবতার বিকাশ ঘটে।

১০। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে জ্ঞানের চাহিদা সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসে। শিক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।

১১। সমাজব্যবস্থার প্রারম্ভিককাল থেকে শুরু করে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ পর্যন্ত সকল স্তরে পরিবার ছিল যৌথকাঠামোর। কিন্তু শিল্প সমাজে এসে তা ভেঙে একক পরিবার কাঠামো তৈরি হয়।

১২। শিল্প সমাজে শ্রমিকশ্রেণির উত্থান হয়। এ শ্রমিকশ্রেণিই পুঁজিবাদের ধারক।

১৫। সমাজব্যবস্থার পূর্ববর্তী স্তরগুলোর উৎপাদনকাঠামো ছিল জীবন নির্বাহী। কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজ বাজারভিত্তিক উৎপাদনকাঠামো তৈরি করে।

১৬। শিল্প বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনার জন্য শ্রমিকশ্রেণির ন্যায় পুঁজিপতি ও মধ্যবিত্ত ব্যবস্থাপক শ্রেণির উত্থান এ যুগেই হয়। মুনাফা পুঁজিপতিরা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মাধ্যমে গ্রহণ করে এরা রাতারাতি আরও উচ্চবিত্ত শ্রেণিতে উঠে।

১৭। শিল্পায়িত সমাজ মানেই নগর সমাজ। শিল্পকারখানায় কর্মরত নগরবাসীদের মধ্যে গ্রামীণ সংস্কৃতি থেকে আলাদা ধরনের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।

বস্তুত আধুনিক জনজীবনকে গতিশীল করেছে শিল্প। যান্ত্রিক ও প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিব্যবস্থার চরম উৎকর্ষতার মধ্যদিয়ে ১৮ শতকে বিশ্বে সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্য শক্তির কর্ণধার ইংল্যান্ডে শিল্পবিল্পব সংঘটিত হয়। ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের পর তা আজ সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে শিল্পায়িত আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন:   শিল্প সমাজ কি বা শিল্প সমাজ বলতে কি বুঝায়?

Related Posts