Home » স্থানীয় শাসন কাকে বলে ও স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব
স্থানীয় শাসন কাকে বলে, স্থানীয় শাসন কী, স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব,

স্থানীয় শাসন কাকে বলে ও স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব

by Susmi
0 comment

স্থানীয় শাসন

স্থানীয় শাসন বা স্থানীয় সরকার বলতে একটি দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলভিত্তিক স্থানীয়ভাবে পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়। বাংলাদেশে স্থানীয় শাসন বলতে সরকারের নীতিসমূহ বাস্তবায়ন এবং সর্বাধিক জনকল্যাণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীনে স্থানীয় পর্যায়ে নিযুক্ত কর্মচারী কর্তৃক এলাকাভিত্তিক শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়।

সামাজিক বিজ্ঞান কোষে (Encyclopedia of Social Science) স্থানীয় শাসনের অর্থ এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, “এটি একটি জনসংগঠন যা কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের কোনো একটি ক্ষুদ্র এলাকার সীমিত পরিমাণে দায়িত্ব পালন করে।” অর্থাৎ স্থানীয় সরকার বলতে একটি ক্ষুদ্র এলাকার শাসনকে বোঝায় যা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে। সরকারের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করাই এর মুখ্য উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো ব্যাখ্যা কর

জাতিসংঘ (UNO) স্থানীয় সরকারের সংজ্ঞা নির্দেশ করেছে নিম্নোক্তভাবে-

“স্থানীয় সরকার কোনো দেশ বা রাষ্ট্রের আইনসভার অতি ক্ষুদ্র রাজনৈতিক বিভক্তিকরণ নির্দেশ করে, কর আরোপ, শ্রমিক নিয়োগসহ স্থানীয় বিষয়গুলোর ওপর যাদের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ থাকে। এ সংস্থার পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত অথবা স্থানীয়ভাবে মনোনীত হয়ে থাকে।” (The term local government refers to a political subdivision of a nation or a state which is constituted by law and has substantial control of local affairs including the power to empose taxes or exact labour for preserved purposes. The governing body of such as entity is elected or otherwise locally selected.)

স্থানীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য

মূলত স্থানীয় শাসনব্যবস্থা কতিপয় বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-

১. স্থানীয় শাসন হলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এলাকাভিত্তিক শাসন। ।

২. স্থানীয় শাসন কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন

৩. স্থানীয় শাসনের কর্মচারিগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত।

৪. স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে সরকারের নীতিসমূহ বাস্তবায়িত হয়।

স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব

আধুনিককালে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের উদ্ভবের ফলে রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কার্যাবলি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সরকারের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জাতীয় ও স্থানীয় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় না। প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সরকারি ক্ষমতা ও কর্তৃত্বকে নিম্নস্তরে নিয়ে আসা। অর্থাৎ স্থানীয় শাসন কর্তৃপক্ষের ওপর কতিপয় দায়িত্ব ও ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন। এতে স্থানীয় সমস্যার সমাধান সহজ হবে। জনগণ অতি সহজে সরকারি সেবা পাবে। আর এ কারণে স্থানীয় শাসনের জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর

স্থানীয় সরকার স্থানীয় জনগণকে স্থানীয় সমস্যা এবং এর সমাধান সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। নাগরিক সমাজকে কর্তব্যপরায়ণ করে তোলে। ডি টর্কভিল (De Toqueville) মনে করেন, “একটি জাতি স্বাধীন সরকার গঠন করতে পারে কিন্তু স্থানীয় সংস্থা ছাড়া স্বাধীনতার চেতনা অনুভব করতে পারে না।” স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে অধ্যাপক লাস্কি (H. J. Laski) বলেন, “স্থানীয় শাসন একটি শিক্ষামূলক শাসন এবং সরকারের অন্যান্য অংশের শাসনের গুরুত্বের চেয়ে এর গুরুত্ব অধিক উপলব্ধি করা হয়।” সুতরাং বর্তমান কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ব্যাপক কার্যাবলির পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, স্থানীয় শাসনের গুরুত্ব অপরিসীম।

Related Posts