আগের লেখাতে আমরা নিরীক্ষা কি এবং নিরীক্ষার উদ্দেশ্য কি সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আজকে আলোচনা করাবো নিরীক্ষার বৈশিষ্ট্য সমূহ সম্পর্কে।
নিরীক্ষার বৈশিষ্ট্য
নিরীক্ষা হল যোগ্যতা সম্পন্ন নিরপেক্ষ ব্যক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠানের প্রামাণ্য দলিলপত্র, ভাউচারও তথ্যের ভিত্তিতে হিসাববহি ও কার্যকলাপের এমন এক সুশৃঙ্খল এবং সমালোচনামূলক পরীক্ষা যার সাহায্যে প্রতিষ্ঠানের হিসাবপত্রের সত্যতা ও যথার্থতা যাচাই করা যায়। নিরীক্ষার সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে কতকগুলো নিরীক্ষার বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। নিম্নে নিরীক্ষার বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা করা হল-
১) নিয়মানুগ পরীক্ষা ব্যবস্থা
একটি একটি বিজ্ঞানসম্মত ও নিয়মানুগ পরীক্ষা ব্যবস্থা।
২) যোগ্য ব্যক্তির দ্বারা কার্য সম্পাদন
উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন, অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা এ কার্য সম্পাদিত হয়। সাধারণত চার্টার্ড একাউনটেন্টদের দ্বারা বাংলাদেশে নিরীক্ষা কার্য সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
৩) সত্যতা সম্পর্কে সন্তুষ্টতা
নিরীক্ষক কোন নির্দিষ্ট সময়ের আর্থিক হিসাবসমূহের সত্যতা সম্পর্কে নিজে নিঃসন্দেহ বা সন্তুষ্ট হবেন।
৪) দলিলপত্র পর্যালোচনা ও ব্যাখ্যা সংগ্রহ
হিসাবসমূহের সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য নিরীক্ষক হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় দলিলপত্র ও ভাউচার পরিদর্শন ও পর্যালোচনা করবেন। প্রয়োজনবোধে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা সংগ্রহ করবেন।
৫) পরামর্শ দেওয়া
প্রতিষ্ঠানের সমগ্র হিসাব ব্যবস্থার বিচার বিশ্লেষণ করে তার ত্রুটিমুক্ত করতে পরামর্শ দেয়াও নিরীক্ষার একটি বৈশিষ্ট্য।
৬) আর্থিক অবস্থার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
প্রতিষ্ঠানের বৎসরান্তিক প্রতিবেদনগুলি তার আর্থিক অবস্থার সত্য চিত্র প্রকাশ করেছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া নিরীক্ষার একটি বৈশিস্ট্য।
৭) সঠিক সম্পদ ও দায় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
শুধুমাত্র আর্থিক অবস্থা নয়, প্রতিষ্ঠানের উদ্বর্তপত্রটি যে বিভিন্ন সম্পত্তি ও দায়গুলিকে সঠিক ও যথাযথভাবে প্রকাশ করেছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়াও নিরীক্ষার বৈশিষ্ট্য।
৮) নোট বই সংরক্ষণ
নিরীক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল নিরীক্ষা কার্যের কিছু বিষয় বা তথ্য সংরক্ষণের জন্য নোট বই সংরক্ষণ করা।
৯) কার্য বণ্টন
নিরীক্ষক তার অধস্তনদের মাধ্যমে নিরীক্ষা কাজ সম্পাদন করেন। অধস্তনদের মধ্যে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুসারে কাজ বণ্টন করা নিরীক্ষার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
১০) প্রতিবেদন পেশ
নিরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল নিরীক্ষা কাজ শেষে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় হিসাবপত্রাদি এবং আর্থিক বিবরণীসমূহ সত্য ও সঠিক প্রতিচ্ছবি প্রতিফলন করে কিনা তা প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিয়োগকর্তার নিকট পেশ করা।