Home » বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা Class 7, 8, 9
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা class 7,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ক্লাস 5,

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা Class 7, 8, 9

by Susmi
2 comments

রচনা: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভূমিকা

বাঙালি সাহিত্যের এক আশ্চর্য প্রকাশ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । শুধুমাত্র বিচিত্র ও বহুমুখী সাহিত্য-প্রতিভার জন্য নয়, তাঁর ভাব, ভাষা, বিষয়বস্তুর গভীরতার জন্যও তিনি অনন্য। তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকর্ম সত্য, সুন্দর, কল্যাণ এই তিন বিশ্বজনীন বোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তাঁর জাদুকরী প্রতিভার স্পর্শ লাগেনি। সুদীর্ঘ জীবনে সাহিত্য সাধনার পাশাপাশি তিনি সমাজকর্ম ও জমিদারি কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কবি হয়েও তিনি মানুষকে কর্মে অনুপ্রাণিত করেছেন। বাংলা সাহিত্যে তিনিই একমাত্র নোবেল বিজয়ী কবি।

রবীন্দ্রনাথের জন্ম ও পরিবারিক ঐতিহ্য

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ২৫শে বৈশাখ ১২৬৮ বাংলা, ৭ই মে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতার নাম সারদা দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। পারিবারিক রীতি অনুযায়ী চার- পাঁচ বছর বয়সে গৃহশিক্ষকের কাছেই তাঁর পড়াশুনা শুরু হয়। বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, বিজ্ঞান, অস্থিবিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি শৈশবে পাঠ গ্রহণ করেন। ছয় বছর বয়সে ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে ভর্তি হন। বছরখানেক পর নর্মাল স্কুলে, তারপর বোল একাডেমিতে তিনি পড়ালেখা করেন। কলকাতার বিখ্যাত সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলেও রবীন্দ্রনাথ কিছুদিন পড়াশুনা করেন। কিন্তু স্কুলের বাঁধা-ধরা পড়ালেখা তাঁর ভালো লাগত না। অভিভাবকরা তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁকে ব্যারিস্টারি পড়ানোর জন্যে লন্ডনে পাঠানো হয়। প্রথমে ব্রাইটনে ও পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় বছর পড়াশুনার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ইতোমধ্যে তাঁর সাহিত্যপ্রতিভার উন্মেষ ঘটে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয় ।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে সর্বদা সাহিত্যের অনুকূল হাওয়া বইত। রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠভ্রাতা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদনায় ১৮৭৭ সালে মাসিক ‘ভারতী’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। দাদার অনুপ্রেরণায় চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি ‘বনফুল’ নামে একটি কাব্য রচনা করেন। এরপর ‘কবিকাহিনী’; ‘সন্ধ্যাসংগীত’ প্রভৃতি কাব্য একের পর এক প্রকাশিত হয়।

সাহিত্য সাধনা ও কর্মময় জীবন

১৮৮২ সালে কলকাতা ১০ নং সদর স্ট্রিটে অবস্থানকালে রবীন্দ্রনাথ “নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি রচনা করেন। এটি তাঁর সমগ্র সৃষ্টিকর্মের ইঙ্গিতবাহী কবিতা। ১৮৮৩ সালের দিকে তিনি পিতার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ এবং পাবনার শাহজাদপুরে ঠাকুর পরিবারের জমিদারি দেখাশুনার দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। কলকাতার বাইরে পল্লিপ্রকৃতি ও তৃণমূল সংলগ্ন মানুষের মাঝে এসে তাঁর সৃষ্টিকর্ম নতুন সমৃদ্ধি লাভ করে। ‘মানসী’, ‘সোনারতরী’, ‘চিত্রা’, প্রভৃতি বিখ্যাত কাব্যগুলো তিনি এ সময়েই রচনা করেন। তাঁর লেখা চলতে থাকে বিরামহীন। রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছের মধ্যে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের জীবন মূর্ত হয়ে উঠেছে। মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ অজস্র কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান, প্রবন্ধ, পত্রসাহিত্য, অনুবাদ, ভাষা ও সাহিত্য, নন্দনতত্ত্ব, চিত্রকর্মসহ বহুমাত্রিক রচনাসম্ভার দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন আমাদের সাহিত্যকে।

১৯১১ সালের ৭ই মে রবীন্দ্রনাথের বয়স ৫০ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ কর্তৃক কবিকে দেশবাসীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নিজের অনুবাদ করা এবং ইংরেজ কবি ডব্লিউ বি ইয়েটস-এর ভূমিকা লেখা ‘গীতাঞ্জলি’ প্রকাশিত হলে ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এ বছরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের কারণে রবীন্দ্রনাথ ইংরেজদের দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেন।

রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য সাধনার পাশাপাশি শিক্ষাবিস্তার ও সমাজকল্যাণমূলক অনেক কাজ করে গেছেন। তিনি ১৯২১ সালে ‘বিশ্বভারতী’ ও ১৯২২ সালে ‘শান্তিনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করে গতানুগতিক শিক্ষার জায়গায় ব্যতিক্রমী শিক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া সমবায় আন্দোলন, কৃষির উন্নয়ন, রাজনীতি, সংস্কৃতি নানা ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ আজীবন অবদান রেখে গেছেন। ২২শে শ্রাবণ ১৩৪৮ বাংলা, ৭ই আগস্ট ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে আশি বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতায় পরলোকগমন করেন।

উপসংহার

রবীন্দ্রনাথের প্রতিতা বিচিত্র ও বহুমুখী হলেও তাঁর প্রধান পরিচয় তিনি কবি। সত্য, সুন্দর, কল্যাণই তাঁর আদর্শ। তিনি মানবতার কবি, প্রকৃতির কবি। পৃথিবীর রূপ-মাধুর্যকে তিনি আকণ্ঠ পান করেছেন। সীমার মাঝে অসীমের সন্ধান করেছেন। অরূপ আলোয় আলোকিত এক জীবনের দিকেই ধাবিত তাঁর সমগ্র সৃষ্টিকর্ম । তাঁর অজস্র সৃষ্টি আমাদের শিল্প-সাহিত্যের অপরিমেয় সম্পদ হয়ে আছে।

আরও রচনা দেখুন:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা (১২৫০ শব্দ)

চরিত্র রচনা

দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনা

 

Related Posts

2 comments

আমার প্রিয় কবি রচনা | তোমার প্রিয় কবি রচনা November 6, 2023 - 11:52 am

[…] বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা Class 7, 8, … […]

জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞানী রচনা (৫০০ শব্দ)। November 12, 2023 - 4:02 pm

[…] বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা Class 7, 8, … […]

Comments are closed.