Home » শিষ্টাচার রচনা (৬০০ শব্দ) JSS SSC HSC Job Exams
শিষ্টাচার রচনা, শিষ্টাচার কি,

শিষ্টাচার রচনা (৬০০ শব্দ) JSS SSC HSC Job Exams

by Susmi
0 comment

শিক্ষার্থীদের পড়ুশুনার সুবিধার্থে শিষ্টাচার রচনা নোট করে এখানে দিয়ে দিলাম। এরপর যেকেউ এখান থেকে রচনাটি পড়তে ও নোট তৈরি করতে পারবে।

শিষ্টাচার রচনা এর সংকেত

ভূমিকা

শিষ্টাচার কি

শিষ্টাচারের গুরুত্ব

ছাত্রজীবনে শিষ্টাচার

শিষ্টাচার ও সমাজজীবন

শিষ্টাচার অর্জনের উপায়

উপসংহার

শিষ্টাচার রচনা

ভূমিকা

আচরণে বিনয় ও পরিশীলিত রুচিবোধের সমন্বিত অভিব্যক্তির নাম শিষ্টাচার। শিষ্টাচার সুন্দর মনের মাধুর্যময় আচরণিক প্রকাশ। মানুষের মাঝে লালিত সুন্দরের প্রকাশ তাঁর চরিত্র। শিষ্টতা সেই সুন্দরের প্রতিমূর্ত রূপ । শিষ্টতা মানুষের চরিত্রকে করে আকর্ষণীয়। যে মানুষ যত বেশি শিষ্ট, অন্যের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি।

শিষ্টাচার কি

সাধারণভাবে আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় বিনয়, নম্রতা আর সৌজন্যের পরিচয়ের নাম শিষ্টাচার । আচরণে মার্জিত না হলে, ব্যবহারে উগ্রতা পরিহার না করলে মানুষ শিষ্টাচারী হতে পারে না । স্বভাবে দাম্ভিকতা ও কর্কশতা পরিহার করতে না পারলে মন মাধুর্যময় হয় না। মানবিক সত্তা যতই চরিত্রের মাধুর্য অর্জন করে ততই সে হয়ে ওঠে স্বভাবে শিষ্ট। শিষ্টতা ব্যক্তির আচরণকে করে মার্জিত, বাচনকে করে সৎ ও সুললিত। শিষ্টাচারহীন মানুষ সবসময় উদ্ধৃত থাকে। তার আচরণে প্রাধান্য পায় অবজ্ঞা, ঔদ্ধত্য, দুর্ব্যবহার ও দুর্মুখতা । অহংকার অন্যকে ছোট ভাবতে প্ররোচিত করে। কিন্তু শিষ্টতা মানুষকে সম্মান করতে প্রণোদনা দেয়।

শিষ্টাচারের গুরুত্ব

শিষ্টাচার ব্যক্তিস্বভাবে দেয় আলোর দীপ্তি। সে আলো ব্যক্তির পরিমণ্ডল থেকে ছড়িয়ে পড়ে গোটা সমাজে, রাষ্ট্রে। এর আলোতে উজ্জ্বল ব্যক্তির আত্মিক মুক্তির সাথে যোগ হয় মানবিক সৌহার্দা ও সম্প্রীতি। শিষ্টজন তাঁর সৌজন্য আর বিনয়ের মাধ্যমে সকলের প্রিয়তা অর্জন করেন, অর্জন করেন অন্যের আস্থা। অন্যের সহানুভূতি, প্রীতি ও সম্মান লাভ করার জন্যে শিষ্টজনই উত্তম। তাই সামাজিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার জন্যে শিষ্টাচারের বিকল্প নেই। এতে করে আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে সকলের আন্তরিকতা প্রকাশ পায়। চূড়ান্ত পর্যায়ে সমাজ হয় শান্তি ও সম্প্রীতির আকর।

ছাত্রজীবনে শিষ্টাচার

জ্ঞানার্জনে নিষ্ঠা, অভিনিবেশ আর শৃঙ্খলাবোধের পাশাপাশি ছাত্রজীবনে শিষ্টাচার অনুশীলন খুবই জরুরি। সৌজন্য ও শিষ্টাচারের ছোঁয়াতেই ছাত্র হয় বিনীত ও ভদ্র। কোনো ছাত্রের কাছে অমার্জিত, বৃঢ় ও দুর্বিনীত আচরণ কখনো কাম্য নয়। শিষ্টাচার ও সৌজন্য ছাত্রজীবনে মনুষ্যত্ব অর্জনের সোপান। সৌজন্য ও শিষ্টাচারের অভাব ঘটলে ছাত্রের জীবন থেকে ভালোবাসা, মমতা, সহানুভূতি, বিনয় ইত্যাদি সুকুমার বৃত্তি হারিয়ে যায়। সে হয়ে ওঠে দাম্ভিক, স্বার্থপর ও নিষ্ঠুর। নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষের জন্যে তাই ছাত্রজীবনেই ব্যবহারে ভব্যতা আর শিষ্টতার সম্মিলন ঘটানোর কোনো বিকল্প নেই।

শিষ্টাচার ও সমাজজীবন

সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিষ্টাচারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তা না হলে সমাজে দেখা দেয় অসহিঞ্চুতা, উচ্ছৃঙ্খলতা ও নিষ্ঠুরতা । শিষ্টাচারের অভাব ঘটলে সমাজ হয়ে ওঠে প্রীতিহীন। সমাজ আচ্ছন্ন হয় বিদ্বেষ, হিংসা, হানাহানি আর অশান্তিতে। তা সমাজজীবনে চরম বিপর্যয় ডেকে আনে। শিষ্টাচারহীন সমাজ হয়ে ওঠে অন্তঃসারশূন্য, বিবেকহীন। সমাজে সৌন্দর্য আর সুকুমার প্রবৃত্তিগুলো হারিয়ে যেতে বসে। প্রেম, প্রীতি ও মমতার অভাবে মানুষ হয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে স্বার্থান্বেষী ও আত্মকেন্দ্রিক।

আশাকরি শিষ্টাচার রচনা আপনাদের অনেক কাজে আসবে। এই রচনাটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হন তবে আমার খুব ভালো লাগবে।

শিষ্টাচার অর্জনের উপায়

শিষ্টাচার আপনা-আপনি মানবহৃদয়ে জন্ম নেয় না। একে অর্জন করে নিতে হয়। এ জন্য শিষ্টাচারের চর্চা শুরু করতে হয় শিশুকাল থেকেই। শৈশবে সৌজন্যবোধের পাঠ নিলে ভবিষ্যতে শিশু মার্জিত স্বভাবের অধিকারী হয়। তাই শিশু কোন পরিবেশে, কার সাহচর্যে, কীভাবে বেড়ে উঠছে সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশু পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথি কিংবা প্রতিবেশী যাদের সাহচর্যে থাকে তাদের কাছ থেকেই আচরণ শেখে। তাই সৎসঙ্গ শিষ্টাচারী হতে সাহায্য করে। স্কুল-কলেজেও শিক্ষার্থীরা শিষ্টাচারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়। সংস্কৃতি চর্চা ও রুচিবান মানুষের সংসর্গও শিষ্টাচার শিক্ষার অনুকূল। ভালো বইও একজন সৎ অভিভাবকের মতোই শিষ্টাচার শেখাতে পারে।

উপসংহার

শিষ্টাচার হচ্ছে সৎ চরিত্র গড়ার অন্যতম বুনিয়াদ । মার্জিত, রুচিশীল ও সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি সমাজ ও জাতীয় জীবনে রাখতে পারেন বিশেষ অবদান। পক্ষান্তরে অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতি শিষ্টাচারের অন্তরায়। তা প্রতিনিয়ত মানবিক মূল্যবোধগুলো ধ্বংস করে ব্যক্তির চরিত্রকে কলুষিত করতে পারে। মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ে জাতি হয়ে পড়তে পারে দুর্বল ও ক্ষীণপ্রাণ। সাম্প্রতিককালে তরুণ ও যুবসমাজের মধ্যে যে অশোভনতা, ঔদ্ধত্য ও উচ্ছৃঙ্খলতার প্রকাশ ঘটছে তা পরিভোগপ্রবণ পণ্যসংস্কৃতি বিস্তারের ফল। এটা জাতির লাবণ্যহীন হওয়ারই লক্ষণ। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে সুস্থতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে তাই আমাদের শিষ্টাচারের চর্চা করা উচিত।

শিষ্টাচার রচনা এর পাশাপাশি অন্যান্য রচনা

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা (৬০০ শব্দ)

খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রচনা (৬৫০+ শব্দ)

বই পড়ার আনন্দ রচনা 

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা (৭০০ শব্দ)

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা (৬০০ শব্দ)

 

Related Posts