Home » খুচরা ব্যবসায়ের কার্যাবলী আলোচনা কর
খুচরা ব্যবসায়ের কার্যাবলী আলোচনা

খুচরা ব্যবসায়ের কার্যাবলী আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

খুচরা ব্যবসায়ের কার্যাবলী

পণ্য বণ্টন ব্যবস্থার সর্বশেষ ধাপ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়কে ভোক্তাদের চাহিদামাফিক পণ্য ও সেবা সরবরাহ করতে গিয়ে বহুবিধ কাজ সম্পাদন করতে হয়। নিচে খুচরা ব্যবসায়ের কার্যাবলী গুলো তুলে ধরা হলো-

১. পূর্বানুমান (Pre-measurement): খুচরা ব্যবসায়ীর সর্বপ্রথম কাজ হলো ভোগকারী গ্রাহকের চাহিদার পূর্বানুমান করা। ভোক্তারা কি জাতীয়, পণ্য কি পরিমাণে ক্রয় করতে ইচ্ছুক সে সম্পর্কে পূর্বেই যথাযথ ধারণা নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীকে পণ্য সংগ্রহ করতে হয়।

খুচরা ব্যবসায় কি? খুচরা ব্যবসায়ের শ্রেণিবিভাগ কর।

২. পণ্য ক্রয় (Buying product): ভোগকারী ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহের জন্য উৎপাদনকারী, পাইকার বা অন্য কোনো উৎস হতে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করা খুচরা ব্যবসায়ীর অন্যতম প্রধান কাজ।

৩. পরিবহন (Transportation): পাইকার বা অন্যান্য উৎস হতে ক্রীত পণ্যদ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্রে বা ব্যবসায় স্থলে আনায়নের জন্য খুচরা ব্যবসায়ীকে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হয়। আবার অনেক সময় খুচরা ব্যবসায়ী ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে বিক্রীত পণ্যদ্রব্য ক্রেতাদের বাড়িতে পৌছে দেয়।

৪. পণ্য বিক্রয় (Selling goods): ক্রীত বা সংগৃহীত পণ্যসামগ্রী চূড়ান্ত ভোক্তাদের কাছে বিক্রয় কর। খুচরা ব্যবসায়ীর একটি প্রধান কাজ। খুচরা ব্যবসায়ী নিজে অথবা বিক্রয়কর্মীর দ্বারা পণ্যের বিক্রয় কাজ সম্পাদন করে থাকে।

৫. পণ্য বিভাজন (Dividing): বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত পণ্যদ্রব্য ক্রেতাদের নিকট বিক্রয়ের সুবিধার্থে খুচরা ব্যবসায়ী পণ্যগুলোকে এদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ছোট ছোট লটে বিভক্ত করেন এবং ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী অল্প অল্প করে বিক্রি করেন।

৬. পণ্য মজুতকরণ (Warehousing): খুচরা ব্যবসায়ীকে সংগৃহীত পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ের পূর্ব পর্যন্ত মজুত করে রাখতে হয়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী যাতে পণ্যদ্রব্য সরবরাহ করতে পারে তজ্জন্য পণ্যের মজুতকরণ আবশ্যক হয়ে থাকে।

৭. মোড়কিকরণ (Packaging): বিক্রীত পণ্যসামগ্রী ভালোভাবে মোড়কিকরণ করে বা প্যাকেটে ভর্তি করে ক্রেতাদের হস্তে অর্পণ করাও খুচরা ব্যবসায়ীর কাজ।

৮. অর্থসংস্থান (Financing): খুচরা ব্যবসায়ী নিজের ব্যবসায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজির সংস্থান ছাড়াও পাইকার বা উৎপাদনকারীকে পণ্যের মূল্য অগ্রিম পরিশোধ করে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দান করে।

৯. ঝুঁকি গ্রহণ (Risk taking): খুচরা ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ ও মজুত করতে হয় বলে সংরক্ষিত পণ্যসামগ্রী বিনষ্ট, চাহিদা পরিবর্তন এবং মূল্যহ্রাসজনিত লোকসানের ঝুঁকি বহন করতে হয়। তাছাড়া বাকিতে পণ্যদ্রব্য বিক্রয়জনিত ঝুঁকিও তাকে বহন করতে হয়।

নতুন পণ্যের মূল্য নির্ধারণ কৌশল বর্ণনা কর।

১০. প্রচার ও বিজ্ঞাপন (Publicity and Advertisement): নিজের দোকানের বিক্রয় বাড়ানোর জন্য অনেক খুচরা ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে আকর্ষণীয় সাইনবোর্ড, দেয়াল লিখন, লাল সালুতে লেখা বিজ্ঞাপন ইত্যাদির মাধ্যমে পণ্যের প্রচার করে থাকে। এছাড়া এরা উৎপাদনকারীদের পণ্যের চাহিদা সৃষ্টির লক্ষ্যে উৎপাদনকারীর পণ্যের বিজ্ঞাপনও দিয়ে থাকে।

১১. পণ্যের মূল্য নির্ধারণ (Determing price of goods): খুচরা ব্যবসায়ীরা সাধারণত পণ্যের ক্রয় মূল্যের সাথে কিছু মুনাফা যোগ করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তারা উৎপাদনকারীদের নির্ধারিত মূল্য কিংবা প্রতিযোগিদের মূল্য অনুসরণ করে থাকে।

১২. পরামর্শ প্রদান (Advising): খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পণ্য নির্বাচন, পণ্য ক্রয় এবং পণ্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়ে থাকে।

১৩. হিসাবরক্ষণ (Accounting): খুচরা ব্যবসায়ীদের আর একটি অন্যতম কাজ হলো দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেনের হিসাবপত্র রাখা। তারা নিজস্ব পদ্ধতিতে নগদ লেনদেন, ধারে ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি যাবতীয় হিসাব সংরক্ষণ করে।

১৪. তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ (Collection and supply of information): খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের চাহিদা, পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে পাইকারদের মাধ্যমে উৎপাদনকারীকে অবহিত করেন। আবার পাইকারদের কাছ থেকে পণ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন খবরাদি জেনে নিয়ে ভোক্তাদের অবহিত করে থাকেন।

১৫. বিক্রয়োত্তর সেবাদান (After sale service): কিছু কিছু খুচরা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রয়ের পরও খুচরা ব্যবসায়ীদেরকে সেবা প্রদান করতে হয়। যেমন- কলকবজা, যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক্স জাতীয় পণ্য বিক্রয়ের পরও প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হয়।

পরিশেষে বলা যায়, খুচরা ব্যবসায়ী উপযুক্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে থাকেন।

Related Posts