ল্যারিংক্স (স্বরযন্ত্র) এর নিচে শ্বাসনালীর (ট্রাকিয়া) উভয় পার্শ্বে দুটি লোবযুক্ত থাইরয়েড গ্রন্থি বিদ্যমান থাকে। এদের ওজন ২০-৩০ গ্রাম। লোব দুটি ইথমাস নামক একটি পাতলা যোজক দ্বারা যুক্ত থাকে। এটি ফলিকল (Folicle) নামক ক্ষুদ্র গোলাকৃতির হাজার হাজার একক নিয়ে গঠিত। এই গ্রন্থি থেকে তিনটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এগুলো হলো থাইরক্সিন হরমোন, ট্রাই আয়োডোথাইরোনিন এবং থাইরো ক্যালসিটোনিন।
থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ
থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ কি কি তা নিম্নে দেয়া হলো:
ক. থাইরক্সিন হরমোন (Thyroxin hormone): এটি আয়োডিন, শর্করা, আমিষ, স্নেহদ্রব্য ও বিপাকের হার ত্বরান্বিত করে। মস্তিষ্ক ও যৌনাঙ্গের বিকাশ ঘটায় এবং স্তনগ্রন্থি থেকে দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এর ক্ষরণ কম হলে শিশুদের বেঁটে বা বামনত্ব (Cretinism) রোগ হয় এবং বড়দের মিক্সিডিমা রোগ হয়। এর ক্ষরণ বেশি হলে থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হয়। ফলে গলগণ্ড বা ঘ্যাগ রোগ হয়। এছাড়া হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায় এবং দেহের দ্রুত ক্ষয় হয়।
খ. ট্রাইয়োডোথাইরোনিন (Triodothyronine): এটি গ্লাইকোপ্রোটিন জাতীয় হরমোন এবং এর কার্যকারিতা থাইরক্সিনের মতোই। ফলে এই হরমোনেরও প্রধান কাজ হলো দেহের বৃদ্ধি। পরিবর্তন ও পরিপূর্ণতা নিয়ন্ত্রণ। এই হরমোনের অভাবে শিশুদের মস্তিষ্ক পরিপূর্ণতা লাভ করে না। খাদ্যে বা পানিতে আয়োডিন কম থাকলে থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। খাদ্যের সাথে নিয়মিতভাবে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করে থাইরয়েড গ্রন্থির অনেক প্রকার জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
গ. থাইরো ক্যালসিটনিন (Thyro calcitonin): এটি গ্লাইকোপ্রোটিন জাতীয় হরমোন রক্তে ক্যালসিয়ানের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হাড়ে ক্যালসিয়াম সঞ্চিত হতে সহায়তা করে। এটি ফসফেটের বিপাক ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে।
পিটুইটারি গ্রন্থির কাজ কি? |