পরিবেশ
পরিবেশ একটি ব্যাপক ধারণা এবং বহুমুখী বিষয়। সাধারণভাবে পরিবেশ বলতে আমরা যেখানে বাস করি তার চারপাশের সবকিছু নিয়ে যে অবস্থা গড়ে উঠে তাকে বুঝায়। ব্যাপক অর্থে, পরিবেশ্ বলতে আমাদের চারপাশে পরিবেষ্টিত বিশ্ব প্রকৃতির সক্রিয় সত্তাকে বুঝে থাকি। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, পরিবেশ বলতে ভ্রুণ সৃষ্টি হতে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত সকল ঘটনা, অবস্থা বা উদ্দীপক, যা মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠন ও আচার-আচরণকে প্রভাবিত করে তার সমন্বিত রূপকে বুঝায়, পরিবেশের উপাদান হলো মানুষ, স্কুল-কলেজ, পশু-পাখি, গাছপালা, খাল-বিল, নদী-নালা, মাটি, পানি, বাতাস ইত্যাদি।
বংশগতি কি বা কাকে বলে? বংশগতির সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ |
পরিবেশের সংজ্ঞা
বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, পরিবেশবিজ্ঞানী প্রমুখ বিভিন্নভাবে পরিবেশকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
সমাজকর্ম অভিধানের ব্যাখ্যানুযায়ী, “পরিবেশ হচ্ছে সে সমস্ত প্রভাব বিস্তারকারী অবস্থা এবং প্রাকৃতিক পরিবেষ্টনী যা কোন জীবিত বস্তুর বর্ধন ও বিকাশে প্রভাব বিস্তার করে।”
মনোবিজ্ঞানী ডগলাস ও হল্যান্ড (Douglas & Holland) এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “যে সমস্ত বাহ্যিক শক্তি, ক্ষমতা এবং অবস্থা জীবন্ত সত্তার জীবন, প্রকৃতি, আচরণ, বর্ধন, বিকাশ এবং এ পরিপক্কতায় প্রভাব বিস্তার করে তার সমন্বয়কে পরিবেশ্ বলে।”
উইলিয়াম পি. স্কট প্রণীত ‘Dictionary of Sociology’ গ্রন্থে পরিবেশ বলতে কার্যকর সক্রিয় পরিবেশকে বুঝানো হয়েছে। গ্রন্থে আরো বলা হয়েছে, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর আচরণকে উদ্দীপিত ও প্রভাবিত করে এমন সবকিছু পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত।
মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র কয়টি ও কি কি? – বিস্তারিত আলোচনা |
ম্যাকাইভার ও পেজ (MacIver and Page) এর মতে, “সার্বিক বিবেচনায় আমাদের বাসভূমিই আমাদের পরিবেশ।”
এম. বেটপ বলেন, “পরিবেশ্ হলো সেসব বাহ্যিক অবস্থার সমষ্টি, যা জীবনের বিকাশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।”
সংজ্ঞাসমূহের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, পরিবেশ্ হলো আমাদের চারপাশের বাহ্যিক ক্ষমতা যার প্রভাবে মানুষের দৈহিক, মানসিক, আবেগীয় ও সামাজিক বিকাশের পথ উন্মুক্ত হয়। এককথায় পরিবেশ হলো বাহ্যিক অবস্থার সমষ্টি, যা মানুষের জীবনকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।