বাক্য কাকে বলে বা বাক্য কত প্রকার ও কী কী তা আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। বা আগে শিখলেও এখন ভূলে গেছি। চলুন সেই ভূলে যাওয়া পড়াগুলো আরেকবার রিপিট করি এই আর্টিকেলে।
বাক্য কাকে বলে?
একটি ভাষা অসংখ্য বাক্যের সমষ্টি। বাক্যগুলো গঠিত হয় শব্দের দ্বারা। বিচ্ছিন্ন বা এলোমেলো শব্দের দ্বারা বাক্য গঠিত হয় না। শব্দগুলোর থাকতে হয় অর্থ এবং একটি শব্দের সাথে অন্য শব্দের থাকতে হয় সম্পর্ক, তবেই বাক্য গঠিত হয়। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো, শব্দ যখন বাক্যে বসে, তখন তাকে পদ বলা হয়।
অতএব, উপরের আলোচনা থেকে বাক্য কাকে বলে তা নিম্নোক্তভাবে বলা যায়,
যে পদ সমষ্টির দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে।
বাক্যের গঠন
প্রচলিত ব্যাকরণে বাক্যকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়। যথা- ১) উদ্দেশ্য (Subject) ও ২) বিধেয় (Predicate)।
যার সম্বন্ধে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য এবং যা বলা হয় তা বিধেয়। যেমন: শিমু বাড়ি যায়- এই বাক্যে ‘শিমু’ উদ্দেশ্য এবং ‘বাড়ি যায়’ বিধেয়।
উদ্দেশ্য অংশে একটি বিশেষ্য কিংবা সর্বনাম কিংবা নামপদস্থানীয় কিছু থাকে। বিধেয় অংশে অবশ্যই একটি ক্রিয়াপদ থাকে। কোন কোন বাক্যে ক্রিয়া পদ উহ্য থাকতে পারে। যেমন, শিমু ভালো মেয়ে। – এই বাক্যে ‘হয়’ ক্রিয়া পদটি উহ্য আছে।
আরও পড়ুন: উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার? উদাহরণসহ আলোচনা কর
বাক্য কত প্রকার ও কী কী?
প্রচলিত ব্যাকরণে গঠনগত দিক থেকে বাক্যকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা-
১) সরল বাক্য (Simple Sentence),
২) মিশ্র বা জটিল বাক্য (Complex Sentence) ও
৩) যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য (Compound Sentence)।
নিম্নে এই তিন প্রকার বাক্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
সরল বাক্য
যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য এবং একটি মাত্র বিধেয় থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন : ছাত্রীরা পড়ে, বৃষ্টি পড়ে।
সরল বাক্যে একের অধিক উদ্দেশ্য-পদ থাকতে পারে কিন্তু বিধেয়-পদ একটি থাকে। যদি একটি সমাপিকা-ক্রিয়ার একাধিক কর্তা থাকে তাহলে সবকটি কর্তা মিলিয়ে একটি মাত্র উদ্দেশ্যরূপে গণ্য করা হয়। যেমন, ‘ঠেলাগাড়িতে ইংরাজ রমণী ও অশ্বপৃষ্ঠে ইংরাজ পুরুষগণ বায়ু সেবনে বাহির হইয়াছেন’। (-রবীন্দ্রনাথ)
মিশ্র বা জটিল বাক্য
যে বাক্যে একটি প্রধান উপবাক্য থাকে এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বা আশ্রিত উপবাক্য থাকে তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে। যেমন, ছাত্রটি যদি পড়ে তাহলেই সে পাস করবে। এখানে ছাত্রের পাস করাই বক্তার মূল বক্তব্য। সুতরাং ‘সে পাস করবে’ হলো প্রধান বাক্য, আর ‘যদি ছাত্রটি পড়ে’ হচ্ছে পাস করার শর্ত, এটি হচ্ছে অপ্রধান বাক্য।
যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য
যে বাক্য একের অধিক প্রধান উপবাক্য সংযুক্ত হয়ে গঠিত হয় তাকে যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য বলে। একের বেশি সরল বা মিশ্রবাক্যকে সংযোজক অব্যয় (এবং, ও, আর প্রভৃতি) বা বিয়োজক অব্যয় (অথবা, বা, কিংবা প্রভৃতি) দিয়ে যুক্ত করে যে বাক্য গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য বলে। যেমন- শিমু রাতের গাড়িতে আসবে এবং এখানেই থাকবে। সে না আসলে তুমি যাবে না কিন্তু সে বলেছে যে তার অসতে দেরী হবে।
বাক্য কাকে বলে এবং বাক্য কত প্রকার ও কী কী- এই আর্টিকেল থেকে আশাকরি উপকৃত হয়েছেন। এরকম আরও কোন কোন বিষয় নিয়ে লিখলে আপনাদের উপকৃত হয়, কাইন্ডলি তা কমেন্টে জানাবেন। আমি পরবর্তী আটিকেলে তা লেখার চেষ্টা করবো।
এছাড়া উচ্চতর শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন লেখা পেতে ভিজিট করতে পারেন সহজপড়া।
ধন্যবাদ।