Home » ব্যষ্টিক পরিবেশ কি? ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি?
ব্যষ্টিক পরিবেশ কি, ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি,

ব্যষ্টিক পরিবেশ কি? ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি?

by Susmi
0 comment

ব্যষ্টিক পরিবেশ কি

ব্যষ্টিক পরিবেশ হচ্ছে ঐ সকল পক্ষ, শক্তি ও পারিপার্শ্বিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত পরিবেশ যা কোম্পানির বাজারজাতকরণ কার্যক্রমকে সরাসরি প্রভাবিত করে। ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো কোম্পানির কাছাকাছি অবস্থান করে এবং কোম্পানি ব্যষ্টিক পরিবেশের কিছু কিছু উপাদানকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো হচ্ছে- কোম্পানি, সরবরাহকারী, বাজারজাতকরণ মধ্যস্থকারবারি, ক্রেতা, প্রতিযোগি ও জনগোষ্ঠী। বিভিন্ন লেখক বিভিন্নভাবে ব্যষ্টিক পরিবেশকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। যেমন-

Philip Kotler এবং Gary Armstrong বলেন, “ব্যষ্টিক পরিবেশ ঐ সব শক্তির সমন্বয়ে গঠিত যেগুলো কোম্পানির কাছাকাছি থাকে এবং কোম্পানির ক্রেতা সেবার সামর্থ্যকে প্রভাবিত করে।”

বাজারজাতকরণ পরিবেশ অধ্যয়ন গুরুত্বপূর্ণ কেন? – ব্যাখ্যা কর

Adrian Palmer বলেন, “ব্যষ্টিক পরিবেশ ঐ সব উপাদানকে বর্ণনা করে যেগুলো কোম্পানির উপর সরাসরি আঘাত করে।” অতএব দেখা যাচ্ছে-

১. ব্যষ্টিক পরিবেশ কতকগুলো পক্ষ বা শক্তির সমষ্টি;

২. এ পরিবেশের উপাদানগুলো কোম্পানির কাছাকাছি অবস্থান করে;

৩. ব্যষ্টিক পরিবেশ কোম্পানির কার্যক্রমে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে;

৪. কোম্পানি কিছুটা হলেও ব্যষ্টিক পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

উপরিউক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায় যে, কোম্পানির ব্যষ্টিক পরিবেশ ঐ সব উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত যেগুলো কোম্পানির কাছাকাছি অবস্থান করে কোম্পানির কার্যক্রমের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে। তাই বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনার উচিত ব্যষ্টিক পরিবেশকে যথাযথভাবে বিবেচনা করে বাজারজাতকরণ কর্মসূচি প্রণয়ন করা।

ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদান

ব্যষ্টিক পরিবেশের পক্ষ, শক্তি ও পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ কোম্পানির কাছাকাছি অবস্থান করে কোম্পানির বাজারজাতকরণ চর্মকাণ্ডের উপর প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এজন্য বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপককে সতর্কতার সাথে ব্যষ্টিক পরিবেশের শক্তিগুলোকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। ব্যষ্টিক পরিবেশের প্রভাবসমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলো-

১. কোম্পানি

কোম্পানি নিজেই তার ব্যষ্টিক বাজারজাতকরণ পরিবেশের একটি শক্তি। বিভিন্ন বিভাগের সহায়তায় কোম্পানির কার্য সম্পাদিত হয়। যেমন- ক্রয় বিভাগ, উৎপাদন বিভাগ, হিসাব বিভাগ, বাজারজাতকরণ বিভাগ প্রভৃতি। এসব বিভাগ যদি তাদের কাজ ঠিকমতো না করে তাহলে বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনা তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে না। এক বিভাগ অন্য বিভাগের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যেমন- ক্রয় বিভাগ কাঁচামাল সময়মতো না কিনলে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বাধাগ্রস্ত হবে। তাই বাজারজাতকরণ যেমন অন্যান্য বিভাগের উপর নির্ভরশীল, তেমনি অন্যান্য বিভাগের সাফল্যও বাজারজাতকরণের। উপর নির্ভরশীল।

২. সরবরাহকারী

কোম্পানির উৎপাদন কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে তাদেরকে সরবরাহকারী বলে। সময়মতো, পরিমানমতো প্রয়োজনীয় উপকরণ নয়বয়াহ না করা হলে স্বল্পমেয়াদে কোম্পানির সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই পণ্যের মান, দাম, নিয়মিত সরবরাহের সামর্থ্য বিবেচনা করে সরবরাহকারী নির্বাচন করতে হয়। প্রয়োজনে একাধিক সরবরাহকারী নিয়োগ করা যেতে পারে।

৩. বাজারজাতকরণ মধ্যস্থকারবারি

বাজারজাতকরণ মধ্যস্থকারবারির সহায়তায় কোম্পানি ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছায়। বাজারজাতকরণ মধ্যস্থকারবারিরা হচ্ছে- পুনঃবিক্রয়কারী, বস্তুগত বণ্টন প্রতিষ্ঠান, বাজারজাতকরণ সেবা সংস্থা এবং আর্থিক মধ্যস্থকারবারি। এগুলোর অসহযোগিতায় কোম্পানির বাজারজাতকরণ কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দক্ষতা, ব্যয়, সেবার মান প্রভৃতি বিবেচনা করে বাজারজাতকরণ মধ্যস্থকারবারি নির্বাচন করা উচিত।

৪. প্রতিযোগি

কোম্পানিকে অনেক প্রতিযোগির সম্মুখীন হতে হয়। প্রতিযোগিদের চেয়ে দক্ষতার সাথে ক্রেতাকে সন্তুষ্ট করতে না পারলে কোম্পানি ক্রেতা হারাবে। মূল্য, মান, সেবা বা অন্য কোনো দিক থেকে কোম্পানিকে প্রতিযোগিদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে। তাই বাজারজাতকারীকে তার প্রতিযোগিদের চিহ্নিত করতে হবে, তাদের কৌশল জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিজের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

৫. জনগোষ্ঠী

বিভিন্ন জনগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। সাত ধরনের জনগোষ্ঠী হচ্ছে- আর্থিক, গণমাধ্যম, সরকারি, নাগরিক কার্যক্রম, স্থানীয়, সাধারণ এবং অভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠী। স্থানীয় জনগোষ্ঠী যদি সহযোগিতা না করে বা কোম্পানির বিরুদ্ধে কথা বলে তাহলে কোম্পানির স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। তাই কোম্পানিকে এসব জনগোষ্ঠীর সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি ও বজায় রাখতে হবে।

৬. ক্রেতাসাধারণ

যারা কোম্পানির পণ্য কেনে তারাই কোম্পানির কেতা। পাঁচ ধরনের ক্রেতা কোম্পানির পণ্য কিনতে পারে। এরা হচ্ছে- ভোক্তা বাজার, ব্যবসায় বাজার, পুনঃবিক্রেতার বাজার, সরকারি বাজার এবং আন্তর্জাতিক বাজার। একেক ধরনের ক্রেতার একেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- ভোক্তা বাজারে যেভাবে পণ্য বিক্রয় করা যাবে, সরকারি বাজারে সেভাবে বিক্রয় করা যাবে না। এজন্য প্রত্যেকটি বাজারকে যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করে বাজারজাতকরণ কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

যেহেতু ব্যষ্টিক পরিবেশের উপরিউক্ত প্রভাবসমূহ বাজারজাতকরণের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে, তাই এসব শক্তিকে যথাযথভাবে বিবেচনা করে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয়।

বাজারজাতকরণ পরিবেশ কাকে বলে | বাজারজাতকরণ পরিবেশ বলতে কি বুঝায়

Related Posts