ভোগ্যপণ্যের ক্রেতাদের নিয়ে ভোক্তা বাজার গঠিত। অন্যকথায়, ভোক্তা বাজারের ক্রেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ভোগের উদ্দেশ্যে পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে। এক্ষেত্রে পণ্য ক্রয়ের পেছনে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য থাকে না। যেমন- একজন ব্যক্তি নিজে ব্যবহারের উদ্দেশে একটি সাবান কিনল। এক্ষেত্রে এ ব্যক্তি ভোক্তা বাজারের সদস্য। বিভিন্ন লেখক বিভিন্নভাবে ভোক্তা বাজারকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে কয়েকটি সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো-
- Peter D. Bennnett এর মতে “ভোক্তা বাজার হচ্ছে অধিক দৃশ্যমান বাজার যা ব্যক্তিগত ক্রেতা নিয়ে গঠিত যারা নিজেদের বা পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য পণ্য কেনে।”
- Philip Kotler এবং Gary Armstrong এর মতে ভোক্তা বাজার হচ্ছে সেকল ব্যক্তি ও পরিবার, যারা ব্যক্তিগত ভোগের জন্য পণ্য ও সেবা ক্রয় ও অর্জন করে।”
- ভোক্তা বাজার প্রসঙ্গে Zikmund এবং d’ Amico বলেন, “ভোক্রাবাজার হচ্ছে একটি বাজার যা সেসব ক্রেতাদের নিয়ে গঠিত যারা ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য পণ্য সরবরাহ করে।
- এ প্রসঙ্গে Skinner বলেন, ব্যক্তি বা গৃহস্থালি ক্রেতার সমন্বয়ে একটি ভোক্তা বাজার গঠিত যারা ক্রয়কৃত পণ্য ভোগ করার বা পণ্য থেকে সুবিধা নেয়ার পরিকল্পনা করে এবং মুনাফার উদ্দেশে পণ্য ক্রয় করে না।
অতএব দেখা যাচ্ছে-
১. ব্যক্তি ও পরিবারকে নিয়ে ভোক্তা বাজার গঠিত
২. ভোক্তা বাজারের সদস্যরা সরাসরি পণ্য ব্যবহার করে;
৩. কোনো ধরনের মুনাফার উদ্দেশে তারা পণ্য ক্রয় করে না। উপরিউক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, যে সকল ক্রেতা ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ভোগের উদ্দেশ্যে পণ্য ক্রয় করে এবং পণ্য ক্রয়ের পেছনে কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য থাকে না তাদের নিয়ে ভোক্তা বাজার গঠিত।
বাজার কি? বাজার কত প্রকার ও কি কি? |
ভোগ্যপণ্যের ক্রেতাদের সমন্বয়ে ভোক্রা বাজার গঠিত। ভোক্তা বাজারের ক্রেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ভোগের জন্য পণ্য ক্রয় করে।
ভোক্তা বাজারের বৈশিষ্ট্য
ভোক্তা বাজারের বৈশিষ্ট্য সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. গঠন: ভোগ্যপণ্যের ক্রেতাদের নিয়ে ভোক্তাবাজার গঠিত। অর্থাৎ, ভোক্তাবাজারের ক্রেতারা সরাসরি পণ্য ভোগ করে।
২. ব্যবহার: ভোক্তা বাজারের ক্রেতারা তাদের ক্রয়কৃত পণ্য ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কাজে ব্যবহার করে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কাজে পণ্য ব্যবহার করা হয় না।
৩. অবস্থান: এ বাজারের ক্রেতারা বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তীর্ণ এলাকায় ছাড়ানো ছিটানো থাকে। কোনো কোনো পণ্যের ক্রেতা সারাদেশ জুড়েও থাকে।
৪. ক্রয়ের পরিমাণ: ভোক্তা বাজারের ক্রেতারা অল্প পরিমাণে পণ্য ক্রয় করে। যেহেতু নিজেরা পণ্য ভোগ করে, তাই খুব বেশি পরিমাণ পণ্য একসাথে কেনার প্রয়োজন হয় না।
৫. ক্রয়ের ঘনত্ব: ক্রেতারা অল্প পরিমাণে পণ্য কেনে বিধায় শেষ হয়ে গেলে আবার কেনে। এজন্য ক্রয়ের ঘনত্ব বেশি। ৬. ক্রেতার সংখ্যা: ভোক্কাবাজারে অনেক ক্রেতা থাকে। অর্থাৎ, এ বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেশি।
৭. বণ্টন প্রণালি: ভোক্তা বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেশি এবং ক্রেতারা ছড়ানো ছিটানোভাবে অবস্থান করে। ফলে বণ্টন প্রণালি দীর্ঘ হয়ে থাকে।
৮. ক্রয় বিবেচনা: এ বাজারের ক্রেতারা নিজেদের প্রয়োজন ও সন্তুষ্টি বিবেচনা করে পণ্য ক্রয় করে।
৯. ভিন্ন চাহিদা: ভোক্তা বাজারের সদস্যদের মধ্যে চাহিদার ভিন্নতা দেখা যায়। আয়, ক্রয়ক্ষমতা, বয়স, রুচি প্রভৃতি কারণে এ ভিন্নতা সৃষ্টি হয়।
১০. পণ্য জ্ঞান: ভোক্রাবাজারের ক্রেতাদের পণ্য সংক্রান্ত বিস্তারিত জ্ঞান থাকে না। বিশেষ করে পণ্যের কারিগরি দিক সম্পর্কে এদের বেশি কিছু জানা থাকে না।
১১. ক্রয় প্রচেষ্টা: এ বাজারের ক্রেতারা খুব কম প্রচেষ্টায় পণ্য সংগ্রহ করে।
১২. ক্রয়ক্ষমতা: এ বাজারের সদস্যদের ক্রয়ক্ষমতা সাধারণত কম থাকে।
ভোক্তা বাজারের উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিভিন্ন পর্যায়ে লক্ষ্য করা যায়।
মার্কেটিং এ অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রভাব আলোচনা কর |