Home » মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর
মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর,

মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্য

বাজারজাতকরণের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে ভোক্তার নিকট প্রবাহিত হয়। বিভিন্ন বাজারজাতকরণ বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বাজারজাতকরণকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এ সকল সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে মার্কেটিং এর বেশকিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। নিম্নে মার্কেটিং তথা বাজারজাতকরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা করা হলো:

১. সামাজিক প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। আধুনিক সামাজিক বাজারজাতকরণ মতবাদে সমাজের কল্যাণকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া বাজারজাতকরণ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির ভোক্তাদের সন্তুষ্টি ও কল্যাণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে। অসামাজিক, সমাজের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত পণ্য, সেবা বা কার্যক্রম কখনো বাজারজাতকরণের অন্তর্ভুক্ত হয় না।

২. অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া

অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় চার ধরনের উপযোগ সৃষ্টির কথা বলা হয়। এর মধ্যে বাজারজাতকরণ স্থান ও স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টি করে। অর্থাৎ স্থান, সময় ও স্বত্বগত উপযোগ সৃষ্টির সাথে জড়িত সকল কার্যাবলি বাজারজাতকরণের অন্তর্ভুক্ত।

৩. ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণের প্রত্যেক পর্যায়ে ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া দেখা যায়। পরিকল্পনা, সংগঠন, প্রেষিতকরণ, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয় সাধন প্রভৃতি ব্যবস্থাপনার কাজ বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। বাজারজাতকরণ মিশ্রণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।

৪. ভোক্তামুখীতা

আধুনিক বাজারজাতকরণে ভোক্তাদের উদ্দেশ্য করে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। “Consumer is the King’ এ বক্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। এজন্য ভোক্তাদের বাজারজাতকরণ মিশ্রণের কেন্দ্রে স্থান দেয়া হয়। ভোক্তাদের প্রয়োজন, অভাব, সন্তুষ্টি প্রভৃতিকে বিবেচনা করে বাজারজাতকরণ মিশ্রণ সাজানো হয়।

৫. ক্রেতার সন্তুষ্টি

ভোক্তার সন্তুষ্টি আধুনিক বাজারজাতকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সন্তুষ্ট ভোক্তা শুধু নিজেই প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনে না, অন্যকেও কিনতে উৎসাহিত করে। এজন্য অনেক প্রতিষ্ঠান ক্রেতার সন্তুষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

৬. কার্যাবলির সমষ্টি

বাজারজাতকরণ হচ্ছে কতকগুলো কাজের সমষ্টি যার সাহায্যে পণ্য ও সেবা ভোক্তার কাছে পৌছানো হয়। যেমন- ক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, প্রমিতকরণ, পর্যায়িতকরণ, অর্থসংস্থান প্রভৃতি।

৭. সামাজিক বাজারজাতকরণ

বাজারজাতকরণ হচ্ছে সমাজের একটি অংশ। তাই বর্তমান সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ও বাজারজাতকরণের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- ধূমপান নিবারণ, মাদকদ্রব্য বর্জন, শিশুকে টিকা দেয়ানো, আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া, আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করা, এইডস প্রতিরোধ করা প্রভৃতি বিষয়ে বাজারজাতকরণ জনসচেতনতা সৃষ্টি করছে।

৮. মধ্যস্থকারবারিদের অস্তিত্ব

বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের মধ্যস্থকারবারির অস্তিত্ব রয়েছে। যেমন- পাইকার, খুচরা ব্যবসায়ী, ডিলার, এজেন্ট প্রভৃতি। এদের সহায়তায় পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে।

৯. উৎপাদনের পূর্বে ও ভোগের পরে বাজারজাতকরণ কার্যাবলি

উৎপাদনের পূর্বে ও ভোগের পরেও বিস্তৃত। উৎপাদনের পূর্বে বাজার জরিপ, কাঁচামাল সংগ্রহ প্রভৃতি করতে হয়। আর ভোগের পরে সন্তুষ্টি পরিমাপ করা হয়।

১০. বিনিময় প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ একটি বিনিময় প্রক্রিয়া। বিনিময়ের মাধ্যমে ব্যক্তি তার কাঙ্ক্ষিত পণ্য পেয়ে থাকে। বিনিময়ে কিছু দিয়ে কিছু অর্জন করা হয়। বাজারজাতকরণ পণ্য বা সেবা দিয়ে মূল্য আদায় করে। বিনিময় প্রক্রিয়া না থাকলে বাজারজাতকরণ অর্থহীন।

১১. উদ্দেশ্য অর্জন প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা করে। বাজারজাতকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তার পণ্য বিক্রয় করে। বাজারজাতকরণ ভোক্তার দ্বারপ্রান্তে পণ্য পৌছে দেয়। এতে ভোক্তা পণ্য কিনে ভোগ করতে পারে। ফলে ব্যক্তির ভোগের উদ্দেশ্য মেটে। এভাবে বাজারজাতকরণ উভয় পক্ষের উদ্দেশ্য অর্জন প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১২. সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ, ভোক্তাদের প্রয়োজন, বুচি, ক্রয়ক্ষমতা প্রভৃতির সাথে পণ্যের সমন্বয় সাধন করে। বাজারজাতকরণ উদ্বৃত্ত অঞ্চলের পণ্য ঘাটতি অঞ্চলে প্রেরণ করে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এজন্য বাজারজাতকরণকে সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়া বলা যায়।

আশাকরি, উপরোক্ত আলোচনা থেকে মার্কেটিং এর বৈশিষ্ট্য তথা বাজারজাতকরণের বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

ই-কমার্স কি? ই-কমার্স এর ব্যবহার লিখ।

Related Posts