Home » রেনেসাঁ কি? রেনেসাঁর কারণ গুলো কি কি?
রেনেসাঁ কি, রেনেসাঁর কারণ গুলো কি কি,

রেনেসাঁ কি? রেনেসাঁর কারণ গুলো কি কি?

by Susmi
1 comment

রেনেসাঁ

ইংরেজি Renaissance শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে রেনেসাঁ বা নবজাগরণ। আর এই Renaissance শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ফরাসি শব্দ Renaissant এবং ইতালীয় শব্দ Rinasciments শব্দ দুটি থেকে। এ শব্দ দুটির অর্থ হলো পুনর্জন্ম বা পুনর্জাগরণ। রোমান সভ্যতার পতনের যুগ থেকে প্রায় ১০০০ বছর পর্যন্ত ইউরোপে তমসা বিরাজিত ছিল। এ সময়ে গ্রিক ও ল্যাটিন সভ্যতার সকল নিদর্শনকে অনুকারে বন্দি রাখা হয় এবং শিল্প সাহিত্যের সামাজিক গুণাবলির অবলুপ্তি ঘটানো হয়। খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে ইউরোপের মানুষের মধ্যে প্রাচীন সংস্কৃতি তথা গ্রিক ও ল্যাটিন সংস্কৃতি এবং সভ্যতা জানার এক দুর্দমনীয় আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এ আগ্রহের ফলশ্রুতিতে গ্রিক ও রোমান ক্ল্যাসিক্যাল সাহিত্য, দর্শন, শিল্পকলা ও সংস্কৃতির বিপুল জ্ঞানভাণ্ডারের দ্বার উন্মোচিত হয়। কুসংস্কার, অন্ধত্ব, রক্ষণশীলতা, কূপমণ্ডুকতা, বিবেকহীনতা, ধর্মীয় উন্মাদনা প্রভৃতি অচলায়তন ভেদ করে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় অনুসন্ধিৎসা, স্বাধীন চিন্তা, যুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবার এক চমৎকার পরিবেশ। আর এই চিন্তাধারার আমূল পরিবর্তনই রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণ নামে পরিচিত। সাধারণভাবে রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণ বলতে পাশ্চাত্য সভ্যতার ইতিহাসের এমন একটা পর্যায়কে বুঝানো হয়ে থাকে যখন জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প সাহিত্য ও কলায় এবং অভূতপূর্ব নবজাগরণ ইউরোপকে অন্ধকার থেকে আলোয় তথা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উন্নীত করেছিল। অন্যভাবে বলা যায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের দ্বারা যে নতুন ভাবধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি ইউরোপীয় চিন্তায় ও কর্মে মূর্ত হয়ে উঠে তাই রেনেসাঁ বা নবজাগরণ। আর এ রেনেসাঁ কোন আকস্মিক ঘটনা নয় বরং তা হলো দীর্ঘ দিনের প্রক্রিয়ার ফল। তাই নবম শতকে শুরু হওয়া পুনর্জাগরণের শীর্ষ বিন্দুর পুরোপুরি হিসেবে রেনেসাকে বিবেচনা করা হয়।

আরও পড়ুন:   সভ্যতা কাকে বলে? প্রাচীন গ্রীক সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা কর

রেনেসাঁর সংজ্ঞা

রেনেসাঁ হলো তা যা মানুষের ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধি, চিন্তা ও বিবেকের বিকাশ ঘটিয়ে ঐতিহাসিক মূল্যবোধ পরিত্যাগ এবং আধুনিক মূল্যবোধ গ্রহণে সাহায্য করে।

এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ডেভিস বলেন, “মধ্যযুগের মানুষের শৃঙ্খলিত ও অবরুদ্ধ স্বাধীনতা প্রীতি এবং সাহসিকতাপূর্ণ চিন্তাধারার যে পুনর্জন্ম তাই হচ্ছে রেনেসাঁ।”

Civilization of the Renaissance in Italy গ্রন্থে বলা হয়েছে “রেনেসাঁ এমন এক জাগরণী জোয়ার যা আধুনিক বা বৈজ্ঞানিক ভাবধারায় সঞ্জীবিত হয়ে ব্যক্তি, সমাজ ও সামগ্রিক জীবনাবোধের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং এক সম্ভাবনাময় নব দিগন্তের সূচনা করে।”

সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, রেনেসাঁ হলো জীবন ও জগতের এক নব আবিষ্কার যা শিল্পকলা, দর্শন, বিজ্ঞান, সমাজ, দর্শন, ভাস্কর্য ও বিভিন্ন মানবিক কার্যকলাপের পরিবর্তনের দ্বারা জীবনাবোধের নবরূপায়ণ ঘটায়।

রেনেসাঁর কারণ

ইউরোপীয় সমাজে রেনেসাঁ হঠাৎ করে কোনো আকস্মিক কারণে শুরু হয় নি বরং রেনেসাঁর পিছনে ছিল দীর্ঘ প্রস্তুতি এবং বহু কারণের সমন্বয়। নিম্নে ইউরোপীয় সমাজে রেনেসাঁর উদ্ভবের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো-

১. শহরের বিকাশ: মধ্যযুগীয় শহরগুলো ছিল মরুভূমির মরুদ্যানের ন্যায়। শহরগুলো ক্রমান্বয়ে মধ্যযুগীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে সংকীর্ণতার সীমা পেরিয়ে সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে যথেষ্ট অবদান রাখে। জীবন সংগ্রামে কোলাহল মুখরিত আধুনিক শহর নগরের ন্যায়ই শহরগুলো মানুষের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার অর্থনৈতিক কার্যকলাপ সম্পাদন করে আধুনিক কালের শহর নগরের পূর্বাভাস দেয়। ইতালির ফ্লোরেন্সে ঐ যুগে শ্রেষ্ঠ মনীষীদের আবির্ভাব ঘটে। শহরে এক বুদ্ধিজীবী প্রভাবশালী জনসমাজের আবির্ভাব ঘটে, যাঁরা মধ্যযুগীয় সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

২. মানব মনে জ্ঞান সঞ্চারের প্রেরণা: দ্বাদশ শতাব্দীতে সমগ্র ইউরোপ যখন রাজনৈতিক জটিলতার নিমগ্ন সে সময়ে কিছু লোক জ্ঞান চর্চাতে মানব মনে মুক্তি খুঁজতে থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে মনীষীগণ সাহিত্য, কাব্য ও দার্শনিক চিন্ত য়ে নিজেদেরকে নিমগ্ন করেন।

৩. উদরনৈতিক শিক্ষার প্রসার: এ সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, গির্জায় ও মঠে জ্ঞানচর্চা চলতে থাকে। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং রেমস, অ্যালিয়ান্স প্রভৃতি শিক্ষায়তনগুলোতে উদারনৈতিক ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষার্থীগণ পুরাতন জ্ঞানের নব মূল্যায়ন শুরু করেন। রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বহু পণ্ডিত ব্যক্তি এই সময়ে সাহিত্য ও কবিতায় প্রভৃত অবদান রেখেছেন।

৪. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার: সামন্তযুগের বিকাশের পূর্বেই ইউরোপের অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটতে থাকে। এতে একটি বনিকগোষ্ঠীর জন্ম হতে থাকে, যারা ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থেই শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রসারে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া শহরের উত্থানের শহরের অধিবাসীদের সংগঠিত জীবন, পেশা, সংস্কৃতি ইত্যাদি তাদেরকে অনুপ্রাণিত করে উচ্চতর পরিবেশ তৈরিতে শহরগুলোতে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ডাক্তার, উকিল, হিসাব রক্ষক, প্রকৌশলী ইত্যাদি পেশার মানুষের বসবাস বৃদ্ধি পায়। শহরের বুদ্ধিজীবী হিসেবে এরা পরিচিত হতে থাকেন। এভাবে মধ্যযুগেই রেনেসাঁর পটভূমি রচিত হয়।

৫. প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সংরক্ষণ: বিভিন্ন মঠ ও গির্জা সংলগ্ন গ্রন্থাগারগুলোতে পণ্ডিত ব্যক্তিগণ প্রাচীন গ্রন্থগুলো নকল করতে শুরু করেন। নবম ও দশম শতাব্দীতে বর্বর আক্রমণে বহু গ্রন্থ নষ্ট হয়ে গেলেও অনেক মূল্যবান পাণ্ডুলিপিও এসব গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত ছিল। এর ফলে দ্বাদশ শতাব্দীতে জ্ঞানচর্চার সুবিধা হয়।

৬. জ্ঞান-বিজ্ঞানের সংমিশ্রণ: একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে পশ্চিম ইউরোপ মুসলিম এবং গ্রিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সংস্পর্শে এসেছিল। দক্ষিণ ইতালি এবং সিসিলিতে নর্মান আক্রমণের ফলে মুসলিম, খ্রিস্টান, গ্রিক ও ল্যাটিন সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটে। স্পেনের মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংগীত ইউরোপে অনুপ্রবেশ করে নতুন জ্ঞানের উন্মেষ ঘটায়।

৭. বাইরের থেকে জ্ঞান সঞ্চার: কণির সংস্কার আন্দোলন এবং জেরুজালেমে তীর্থযাত্রা ইউরোপীয়দের মধ্যে জ্ঞানের নবদিগন্তের সূচনা করে। প্রথম ক্রুসেডের মাধ্যমে ইউরোপীয় খ্রিস্টানগণ প্রাচ্যের জ্ঞান-বিজ্ঞানের সংস্পর্শে আসে।

৮. জ্ঞানী ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয়তাবোধ: একাদশ শতাব্দীতে বিশেষ করে পোপ ৭ম গ্রেগরির সময়ে দক্ষ পণ্ডিত ও আইনজ্ঞদের প্রয়োজন অনুভূত হয়। ইনভেস্টিচার সংগ্রামের সময়ে পোপ এবং সম্রাট আত্মরক্ষার জন্য এসব পণ্ডিত ব্যক্তিদের প্রয়োজন বেশি বোধ করেছিলেন। এগুলোই পাণ্ডিত্য অর্জনে এবং জ্ঞান চর্চায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।

৯. ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুপ্রবেশ: মধ্যযুগে ইউরোপে যখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ধস নেমে আসে তখন ইসলামি জগতে জ্ঞানের মশাল জ্বেলে উঠে। মুসলমানরা আব্বাসীয় যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধন করে। গ্রিক ভাষায় লিখিত বিভিন্ন গ্রন্থাবলি আরবিতে অনুবাদ করে মুসলমানরা গভীর জ্ঞানের পরিচয় দেয়। তা ছাড়া মুসলমানরা নিজেরাও অনেক গ্রন্থ রচনা করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চার সুযোগ করে দেয়। ইসলামি সভ্যতার কেন্দ্র হিসেবে সে যুগে কর্ডোভা ও বাগদাদ ছিল খুবই স্মরণীয়। ইসলামি জ্ঞানের সংস্পর্শে এসে ইউরোপে নতুনভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা শুরু হয়।

১০. ক্রুসেড অভিযান: বার ও তের শতকে জ্ঞানস্পৃহার যে প্রকাশ দেখা দেয় তা সৃষ্টি হয় ক্রুসেড অভিযানসমূহের মাধ্যমে। তুরস্ক অধিকার থেকে পবিত্র জেরুজালেম উদ্ধার অভিযানে যে উৎসাহ সৃষ্টি হয় তা ইউরোপকে মধ্যযুগীয় তন্দ্রা থেকে উদ্ধার করে। ধর্মের নামে যে নব নব চেতনা ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় তা ইউরোপীয়দের মনকে ক্রমান্বয়ে ব্যাপক জাগরণের দিকে ধাবিত করে। এ ক্রুসেড প্রসূত চেতনা নানা দিক দিয়ে প্রসার লাভ করে। এগার থেকে তের শতক পর্যন্ত এ দীর্ঘ সময়ে সংঘটিত ক্রুসেড অভিযানগুলোর মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় আরবীয় সভ্যতা-সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হয়, যা তাদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। এভাবে শিক্ষা, জ্ঞান ও চিন্তার জগত ক্ষেত্রে ক্রুসেড প্রসূত উদ্দীপনা রেনেসাঁর পথ সুগম করে।

১১. মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার: ইউরোপে নবজাগরণের অন্যতম সহায়ক কারণ ছিল মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার। মুদ্রণযন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োজনীয় গ্রন্থাবলি পাওয়া খুব সহজ হয়ে যায়। নতুন নতুন গ্রন্থ রচনায় পণ্ডিত ব্যক্তিরা বিশেষভাবে উৎসাহী হয়ে পড়ে। সহজলভ্য গ্রন্থরাজি মানুষকে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় এগিয়ে আসতে সুযোগ করে দেয়। যার ফলে মানবজীবনে নবজাগরণের সৃষ্টি হয়।

১২. মানুষ ও প্রকৃতির প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি: মধ্যযুগের শেষ দিকে Humarist বা মানব প্রকৃতিবেত্তাদের আবির্ভাব ঘটে যারা মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ভাবনার জগতে নতুন দিক উন্মোচন করেন। তারা প্রচার করেন, মানুষ তার কর্মের মধ্য দিয়েই নিজের শক্তির ফলাফল পেতে পারে। মানুষ নিজেই বিপুল সম্ভাবনা শক্তির অধিকারী। এসব মনীষী প্রকৃতির ঘটনাবলির ব্যাখ্যা খুঁজতে চেষ্টা করেন এবং প্রতিটি ঘটনার পিছনে কোনো না কোনো যথার্থ কারণ খুঁজে বের করেন। এভাবে মানুষ ও প্রকৃতি জগতের নানা রহস্য উদঘাটিত হতে থাকে। মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্কে এবং এর সৌন্দর্য সম্পর্কে তারা তখন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লিখতে শুরু করেন। শিল্পীরা এসব নিয়ে ছবিও আঁকেন।

১৩. গির্জা ও সামন্ত অভিজাতদের সমালোচনা: মানবতাবাদীরা গির্জা কর্তৃক মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টির কঠোর সমালোচনা শুরু করেন। তবে তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস হারান নি। তাদের সমালোচনা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নয় বরং গির্জার বিরুদ্ধে ছিল। গির্জার পুরোহিত ও তাদের সহচরদের ধর্মের নামে ভণ্ডামি, কিংবা মূর্খতার বিরুদ্ধে মানবতাবাদীরা সমালোচনা করেন। একই সাথে তারা সামন্ত অভিজাতদেরও সমালোচনা করেন এই বলে যে, এরা অলস, ভোগবাদী, কর্মবিমুখ এবং মানুষের প্রতি অসহিষ্ণু। এর জন্য তারা সামন্ত প্রথাকে দায়ী করেন। গির্জার বিরুদ্ধে তাদের সমালোচনা রেনেসাঁর অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেন।

১৪. কনস্টান্টিনোপলের পতন: ইউরোপে নবজাগরণে কনস্টান্টিনোপলের পতনও একটি অন্যতম কারণ। ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে তুর্কিদের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতন ঘটে। রেনেসাঁর জন্য এ অধ্যায়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ সময়টাকে বলা হয় আধুনিক যুগের সূচনাকাল। কনস্টান্টিনোপল মুসলমানদের হাতে আসায় গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষার প্রসার ঘটে। যার ফলে ইউরোপের নব চেতনার সৃষ্টি হয়। ইউরোপীয়রা মুসলিম মনীষীদের সংস্পর্শে এসে নিজেদের সকল জড়তা কাটিয়ে উঠবার সুযোগ পায় এবং জীবনযাপনের নতুন পথের সন্ধান পায়।

১৫. প্রাচীন সমাজ সংস্কৃতির প্রতি আকর্ষণ ও প্রাচীন পান্ডলিপি উদ্ধার: ইউরোপের মানবতাবাদীরা বিশেষ করে ইতালির মনীষীরা প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সমাজ, সাহিত্য, দর্শন ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর আকর্ষণ বোধ করেন এবং বহুগুণে এগুলোর চর্চা শুরু করেন। প্রাচীন সাহিত্যের পান্ডুলিপি উদ্ধার করে সেগুলো রোমে একত্রিত করা হয়। ফলে রোম রেনেসাঁ ও সাহিত্যানুরাগীদের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

মধ্যযুগে ইউরোপে নবজারণ একটি অন্যান্য ঘটনা। সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। রোমান সভ্যতার পতনের পর ইউরোপীয় সমাজ অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ সময়ে গ্রিক ও ল্যাটিন সভাতার সকল নিদের্শনকে অন্ধকারে বন্দি করে রাখা হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ স্থবির হয়ে পড়ে। এমনিতর অবস্থা থেকে উত্তোরণই ছিল রেনেসাঁ বা নবজাগরণ।

Related Posts

1 comment

সামাজিক ইতিহাসের প্রকৃতি আলোচনা কর November 28, 2023 - 11:38 am

[…] রেনেসাঁ কি? রেনেসাঁর কারণ গুলো কি কি? […]

Comments are closed.