Home » সামষ্টিক পরিবেশ কি? সামষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি?
সামষ্টিক পরিবেশ কি, সামষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি, সামষ্টিক পরিবেশ কাকে বলে,

সামষ্টিক পরিবেশ কি? সামষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি?

by Susmi
0 comment

সামষ্টিক পরিবেশ কি

কোম্পানি ও অন্যান্য ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহ বৃহত্তর সামষ্টিক পরিবেশের মধ্যে কাজ করে। কোম্পানির বাইরের বৃহত্তর সামাজিক শক্তিসমূহ সামষ্টিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। সামষ্টিক পরিবেশ কোম্পানির জন্য সুযোগ ও হুমকি দুটোই সৃষ্টি করতে পারে। এ পরিবেশ কোম্পানির কাজে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে এবং কোম্পানি সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো হচ্ছে জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক, প্রাকৃতিক প্রযুক্তিগত, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিসমূহ। বিভিন্ন লেখক বিভিন্নভাবে সামষ্টিক পরিবেশের সংজ্ঞা দিয়েছেন। যেমন-

Philip Kotler এবং Gary Armstrong এর মতে, “সামষ্টিক পরিবেশ হচ্ছে বৃহত্তর সামাজিক শক্তিসমূহ যেগুলো ব্যস্তিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে।”

Adrian Palmer বলেন, “সামষ্টিক পরিবেশ ঐসব উপাদানকে বর্ণনা করে যেগুলো কাছাকাছি পরিবেশের পেছনে থাকে কিছু তবুও সংগঠনকে প্রভাবিত করতে পারে।” অতএব দেখা যাচ্ছে-

১. সামষ্টিক পরিবেশ কতকগুলো পক্ষ ও শক্তি;

২. সামষ্টিক পরিবেশ ব্যষ্টিক পরিবেশকে ঘিরে থাকে;

৩. এ পরিবেশ বাজারজাতকরণ কর্মকান্ডে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে;

৪. সামষ্টিক পরিবেশকে কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

পরিশেষে বলা যায়, সামষ্টিক পরিবেশ হচ্ছে ঐ সকল বাহ্যিক উপাদান যেগুলো ব্যষ্টিক পরিবেশকে ঘিরে রাখে এবং কোম্পানির বাজারজাতকরণ কার্যক্রমকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে। যেহেতু সামষ্টিক পরিবেশকে কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাই কোম্পানির উচিত সামষ্টিক পরিবেশ ও এর পরিবর্তনকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং নিজেকে তার সাথে খাপ খাওয়ানো।

ব্যষ্টিক পরিবেশ কি? ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদান কি কি?

সামষ্টিক পরিবেশের উপাদান

সামষ্টিক বাজারজাতকরণ পরিবেশ কোম্পানির সমগ্র ব্যষ্টিক পরিবেশকে ঘিরে থাকে এবং পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এ পরিবেশ কোম্পানির বহির্ভূত বলে কোম্পানির নিজেকে সামষ্টিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে হয়। সামষ্টিক পরিবেশের উপাদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

১. জনসংখ্যা পরিবেশ

জনসংখ্যা পরিবেশ হচ্ছে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বাজারের সদস্যদের সংখাতাত্ত্বিক পরিসংখ্যান। যেমন- বয়স, ঘনত্ব, লিঙ্গ, বর্ণ, জাতি প্রভৃতি। জনসংখ্যার বয়স কাঠামোর পরিবর্তনশীলতা, পারিবারিক পরিবর্তনশীলতা, ভৌগোলিক স্থানান্তর, শিক্ষা, বর্ণ ও পেশা, বিচিত্রতা বাজারজাতকরণ কর্মকাণ্ডে প্রভাব বিস্তার করে। তাই বাজারজাতকারীকে জনসংখ্যা, পরিবেশ ও এর পরিবর্তনের প্রতি দৃষ্টি রাখতে হয়।

২. অর্থনৈতিক পরিবেশ

অর্থনৈতিক পরিবেশ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যয় ধাঁচকে প্রভাবিত করে। আয়, পণ্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, কর, সুদের হার প্রভৃতির উপর ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যয় ধাঁচ নির্ভর করে। যেমন- পণ্যমূল্য যদি বেশি হয় তাহলে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে। এজন্য ভোক্তাদের আয়ের পরিবর্তন ও ব্যয় ধাঁচের পরিবর্তনের উপর বাজারজাতকারীকে দৃষ্টি দিতে হবে।

৩. প্রাকৃতিক পরিবেশ

জলবায়ু, খনিজসম্পদ, নদী, বনজসম্পদ প্রভৃতি নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত। প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন বাজারজাতকরণ কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে, তেমনি বাজারজাতকরণ কার্যক্রম দ্বারাও প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন- কাঁচামাল যদি পাওয়া না যায় বা ব্যয় বেশি হয় তাহলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে বা উৎপাদন ব্যয় বেশি হবে। তাই বাজারজাতকারীকে কাঁচামালের ঘাটতি, দূষণ বৃদ্ধি, সরকারি হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি, পরিবেশ সহায়ক কৌশল ও চর্চার মতো প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রবণতাগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে।

৪. প্রযুক্তিগত পরিবেশ

প্রযুক্তিগত পরিবেশ নতুন প্রযুক্তি, নতুন পণ্য ও বাজার সুযোগ সৃষ্টি করে। প্রযুক্তিগত পরিবেশ কোম্পানির সামনে সুযোগ ও হুমকি দুটোই নিয়ে আসতে পারে। তাই বাজারজাতকারীকে প্রযুক্তিগত পরিবেশের প্রবণতাগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিতে হয়। এসব প্রবণতার মধ্যে রয়েছে দ্রুত প্রযুক্তিগত পরিবেশের পরিবর্তন, নতুন বাজার ও সুযোগ, গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় এবং বর্ধিত নিয়ন্ত্রণ। পরিবর্তিত প্রযুক্তির সাথে তাল মেলাতে না পারলে বাজারজাতকারী টিকে থাকতে পারবে না।

৫. রাজনৈতিক পরিবেশ

রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত আইন-কানুন, সরকারি সংস্থা এবং চাপ প্রয়োগকারী দল বাজারজাতকরণ কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। যেমন- সরকার যদি বাজারজাতকরণের সাথে সম্পর্কিত আইনসমূহ কঠোরভাবে কার্যকর করে, তাহলে বাজারজাতকারীকে যথাযথভাবে সেসব আইন মেনে চলতে হবে। তাই বাজারজাতকারীকে আইন-কানুন, সরকারের মনোভাব, নৈতিকতা প্রভৃতি বিবেচনা করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৬. সাংস্কৃতিক পরিবেশ

সমাজের বিশ্বাস, মূল্যবোধ, জীবন ধারণ পদ্ধতি, আচরণ নীতিনীতি, মনোভাব প্রভৃতি বিষয় বাজারজাতকরণ কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন- বাংলাদেশে ধর্মবিশ্বাসের কারণে প্রকাশ্যভাবে মদ বাজারজাতকরণ করা যায় না। মানুষের কোন সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ প্রাথমিক ও কোনগুলো মাধ্যমিক তা বিবেচনা করে বাজারজাতকারীকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

যেহেতু সামষ্টিক বাজারজাতকরণ পরিবেশের শক্তিসমূহ বাজারজাতকারীর নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত, তাই এসব শক্তিকে যথাযথভাবে বিবেচনা করে বাজারজাতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।

বাজারজাতকরণ পরিবেশ অধ্যয়ন গুরুত্বপূর্ণ কেন? – ব্যাখ্যা কর

Related Posts