Home » বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার আলোচনা কর
বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার, দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার,

বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

দুর্নীতির কারণ

উন্নত অনুন্নত প্রায় সকল দেশেই দুর্নীতির অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। বর্তমানে এটি একটি স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী এইচ. এ ফেলপ্স মনে করেন, প্রত্যেক সমাজে মানুষের ধনসম্পদ অর্জন, দৈহিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা এবং দলগত ও ব্যক্তিগত সামঞ্জস্য বিধানের কতকগুলো আদর্শ রয়েছে। এসব আদর্শ সমাজের অনুমোদন লাভের মাধ্যমে সমাজে স্থায়ী রূপলাভ করে। এসব আদর্শের বিচ্যুতি থেকে জন্ম নেয় সামাজিক দুর্নীতি। কোনো ব্যক্তি বা দল যদি সমাজ অনুমোদিত আদর্শ ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে নীতিবহির্ভূত পন্থায় স্বীয় স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করে, তখন তাকে দুর্নীতি বলে। সমাজ বা রাষ্ট্রদেহে দুর্নীতির সক্রিয় অবস্থান নিয়ে আজ আর কোনো বিতর্ক নেই। তবে সকল দেশের দুর্নীতির মাত্রাগত ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দুর্নীতির প্রকৃতি ও পরিধি বিচিত্র ধরনের। সেই প্রেক্ষিতে দুর্নীতির পেছনে রয়েছে বহুবিধ কারণ। নিচে দুর্নীতির কারণ গুলো চিহ্নিত করা হলো-

১. আর্থিক অসচ্ছলতা

যেকোনো সমাজ বা রাষ্ট্রের দুর্নীতির কারণ গুলোর মধ্যে প্রধান কারণ হলো আর্থিক অসচ্ছলতা ও জীবনযাত্রার নিম্নমান। বাংলাদেশেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দুর্নীতির প্রসার ঘটছে। দারিদ্র্যের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ স্বাভাবিক উপায়ে উপার্জিত অর্থের দ্বারা পারিবারিক চাহিদা পূরণ করতে পারে না বিধায় অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনের পথ বেছে নেয়, যা দুর্নীতির পর্যায়ভুক্ত। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বল্প আয়ের মানুষ এভাবে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে।

সার্ক কি, কিভাবে গঠিত হয়, উদ্দেশ্য ও মূলনীতি গুলো কি কি?

২. ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব

বাংলাদেশে বেকার সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দুর্নীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেকার সমস্যার অন্যতম কারণ কর্মসংস্থানের অপর্যাপ্ততা। অশিক্ষিত-শিক্ষিত, যোগ্যতাসম্পন্ন একজন বেকার যখন চাকরি লাভের জন্য নিজের সহায়-সম্বল বিক্রি করে ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পেলে সেও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে সুযোগ বুঝে ঘুষ গ্রহণ করে। এভাবে সমাজে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে।

৩. উচ্চাভিলাষী জীবনের মোহ

আর্থিক অনটন দুর্নীতির অন্যতম কারণ হলেও সমাজে যারা আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত তারাও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অধিক সম্পদের মালিক হতে সচেষ্ট। রাতারাতি অধিক সম্পদের মালিক হওয়া বা সমাজে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভের আকাঙ্ক্ষা আমাদের দেশে দুর্নীতির অন্যতম কারণ। অর্থাৎ কীভাবে দ্রুত সম্পদশালী হয়ে সমাজে যশ, খ্যাতি ও প্রভাব-প্রতিপত্তি লাভ করা যায় এবং সে কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়।

৪. প্রচলিত মূল্যবোধ

আমাদের দেশের প্রচলিত মূল্যবোধ দুর্নীতির অন্যতম কারণ হিসেবে পরিগণিত হয়। অন্যান্য সমাজের ন্যায় বাংলাদেশেরও Universalistic Values-এর তুলনায় Particularistic Values-এর গুরুত্ব অনেক ক্ষেত্রে বেশি। Particularistic Values বলতে পরিবার, জ্ঞাতিগোষ্ঠী, স্বজাতি প্রভৃতি লোকদের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকে বোঝায়। অন্যদিকে, Universalistic Values বলতে এরূপ সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির অন্ধ আনুগত্য না দেখিয়ে যোগ্যতার মানদণ্ডে মূল্যায়ন করার রীতিকে নির্দেশ করে।

৫. অসম অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা

আমাদের সমাজে অর্থই হলো সামাজিক মানমর্যাদা পরিমাপের প্রধান মানদণ্ড। যার যত বেশি অর্থসম্পদ, সমাজে তার তত বেশি মানমর্যাদা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি। সামাজিক মর্যাদা লাভের প্রত্যাশায় তীব্র অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার কারণে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করে। কারণ সৎ পথে অর্জিত স্বল্প অর্থে মানমর্যাদা, প্রভাব-প্রতিপত্তি লাভ করা সম্ভব নয় বলেই দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হয়।

৬. আইনের অস্পষ্টতা

আইনের অস্পষ্টতার কারণেও দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। প্রচলিত আইনের অস্পষ্টতা বা আইনের ফাঁক গলিয়ে অনেকেই দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ক্ষেত্রে এরূপ দুর্নীতি বেশি লক্ষ করা যায়। আবার অনেক সময় সংশ্লিষ্টদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়।

৭. রাজনৈতিক অস্থিরতা

রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেও দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঠিক চর্চার অভাব, অগণতান্ত্রিক উপায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বদল, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি দুর্নীতি বিস্তারের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেকোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা খুবই ব্যয়বহুল। প্রার্থীরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনি ব্যয় উঠানোর চেষ্টা করে। আবার রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে অনেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নেয়।

৮. আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব

বিভিন্নক্ষেত্রে দুর্নীতির বিস্তারের আরেকটি অন্যতম কারণ হলো প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া। আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়ার কারণে দুর্নীতিবাজরা আরও উৎসাহিত হচ্ছে। আবার আইনের বৈষম্যমূলক প্রয়োগও দুর্নীতি বিস্তারে সহায়তা করে।

দুর্নীতির প্রতিকার

সমাজবিজ্ঞানী এইচ. এ. ফেলস মনে করেন, প্রত্যেক সমাজে মানুষের ধনসম্পদ অর্জন, দৈহিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা এবং দলগত ও ব্যক্তিগত সামঞ্জস্য বিধানের কতকগুলো আদর্শ রয়েছে। এসব আদর্শ সমাজের অনুমোদন লাভের মাধ্যমে সমাজে স্থায়ী রূপলাভ করে। এসব আদর্শের বিচ্যুতি থেকে জন্ম নেয় সামাজিক দুর্নীতি। কোনো ব্যক্তি বা দল যদি সমাজ অনুমোদিত আদর্শ ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে নীতি বহির্ভূত পন্থায় স্বীয় স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করে, তখন তাকে দুর্নীতি বলে। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, স্বল্প আয়ের কারণে দুর্নীতি থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দুর্নীতি দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। সরকারি অফিস-আদালত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই দুর্নীতির অবাধ বিচরণ লক্ষণীয়। দুর্নীতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বেশ কয়েকটি রিপোর্ট বাংলাদেশের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছে। সুতরাং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিকারের লক্ষ্যে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক দায়িত্ব। দুর্নীতি দমন আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও দমন করার চেষ্টা চলছে। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবেলা করার জন্য নিম্নোক্ত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বাঞ্ছনীয়।

১. রাজনৈতিক অঙ্গীকার

ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রদেহ থেকে দুর্নীতি উৎখাতের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার (Political Commitment)। রাজনীতিক এবং সরকারের নীতিনির্ধারক যারা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেন তাদের সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতাই সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারে।

২. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা

দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও দমনের পূর্বশর্ত আইনের শাসন। দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে কেউ যাতে আইনের ফাঁক দিয়ে পার পেতে না পারে সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন। আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ।

৩. প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ

দুর্নীতিরোধে কেবল আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন আইনের সঠিক প্রয়োগ। প্রচলিত আইনের অস্পষ্টতা দূরীকরণের পাশাপাশি আরও যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতির চাকা টেনে ধরতে হবে।

৪. ন্যায়পালের পদ সৃষ্টি

সমাজ থেকে দুর্নীতি নামক ভয়ানক সামাজিক ব্যাধি দূর করার জন্য ‘ন্যায়পালের’ পদ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ সংবিধানের ৭৭নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, “সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করতে পারবে।” ন্যায়পাল যেকোনো মন্ত্রণালয়, সরকারি কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের যেকোনো কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ সংসদ আইনের দ্বারা আরোপিত অনুরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন। সরকারি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ক্ষমতাধর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এতে দুর্নীতি বহুলাংশে হ্রাস পাবে।

৫. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা দুর্নীতি প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত রেখে বিচারপতিদের স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বিচারের দায়িত্ব পালনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। দুর্নীতিবিষয়ক মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি এবং মামলার রায় কার্যকর করার পূর্ণ ক্ষমতা বিচার বিভাগকে প্রদান করতে হবে।

পৌরসভার কাজ কি | পৌরসভার গঠন ও কার্যাবলী

৬. গণসচেতনতা সৃষ্টি করা

দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের পূর্বশর্ত হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। দুর্নীতিসংক্রান্ত তথ্যাদি গণমাধ্যমে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। সেই সাথে প্রচার ও গণমাধ্যমের অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৭. নৈতিক ও সামাজিক চেতনা সৃষ্টি

দুর্নীতি দমনের একটি উত্তম উপায় হলো মানুষের নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করা। পরিবার থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক ঐতিহ্য, নীতি, আদর্শ, মূল্যবোধ ইত্যাদির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে যাতে প্রত্যেকেই এগুলোর পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের প্রতি নিরুৎসাহিত হয়।

৮. সরকারি নিরীক্ষক কমিটি গঠন

সরকারি পর্যায়ে সকল প্রকার দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সরকারি নিরীক্ষণ কমিটি (Public Accounts Committee) গঠন করা। রাষ্ট্রের কার্যনির্বাহী বিভাগের বাজেটের ওপর আইনগত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না হলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারি কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীর সরকারি হিসাব নিরীক্ষাপূর্বক রিপোর্টি পেশ করবেন।

৯. দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করা

দুর্নীতির মূল্যেৎপাটনের একটি শক্তিশালী এবং কার্যকর উপায় হলো দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করা। ঘুষ বা উৎকোচ গ্রহণকারী, চোরাচালানি, সুদখোর, অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সাথে আত্মীয়তা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারলে দুর্নীতির প্রবণতা হ্রাস পাবে। অর্থাৎ দুর্নীতিবাজদেরকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

১০. দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা

বাংলাদেশে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি নজরদারি করার জন্য স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০০৪ সালে। এ কমিশন এ পর্যন্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জিত হলেও অধিকতর সাফল্যের জন্য কমিশনকে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। দুর্নীতিকে না, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে অংশ নিন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকাণ্ড আরও জোরদার করতে হবে।

উপরিউক্ত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব হলে সমাজ ও রাষ্ট্রকে দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য সর্বস্তরের মানুষকে দেশপ্রেমের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এগিয়ে আসতে হবে তবেই দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব হবে।

Related Posts