Home » নিয়ন্ত্রণের কৌশল সমূহ আলোচনা কর।
নিয়ন্ত্রণের কৌশল সমূহ আলোচনা কর

নিয়ন্ত্রণের কৌশল সমূহ আলোচনা কর।

by Susmi
0 comment

নিয়ন্ত্রণের কৌশল বা পদ্ধতি

প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের কৌশল অবলম্বন করা হয়। কোন ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে তা সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপকের অভিরুচি এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে যে সব নিয়ন্ত্রণের কৌশল বা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে তা নিচে আলোচিত হলো-

১. বাজেট

বর্তমান সময়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল হচ্ছে বাজেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ। পরিকল্পনাকে যখন সংখ্যায় প্রকাশ করা হয় তখন তাকে বাজেট বলা হয়। এ পদ্ধতিতে বাজেটের মাধ্যমে লক্ষ্য নির্ধারণ করার পর লক্ষ্যের সাথে অর্জিত ফলাফল তুলনা করা হয় এবং কোনো বিচ্যুতি বা পার্থক্য থাকলে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

২. পরিসংখ্যানিক উপাত্ত

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সংখ্যাভিত্তিক তথ্য পাওয়া গেলে এর দ্বারা পরিসংখ্যান পদ্ধতির সাহায্যে বিচার বিশ্লেষণ করে নিয়ন্ত্রণ কাজ করা যায়। যেমন- বিক্রয় কিংবা ব্যয় শতকরা কতভাগ বৃদ্ধি পেল বা হ্রাস পেল তা পরিসংখ্যান পদ্ধতিতে বের করা যায়।

আরও পড়ুন:   নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গুলো কি কি?

৩. বিশেষ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ

কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রতিবেদন সহায়তা করে থাকে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রণয়নের ব্যবস্থা থাকলে এর দ্বারা ব্যবস্থাপক সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কার্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

৪. কার্য পরীক্ষা

আর একটি নিয়ন্ত্রণের কৌশল হচ্ছে কার্য নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা যা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে স্বাধীনভাবে ও নিয়মিতভাবে কাজের মূল্যায়ন করে থাকে। এ কাজটি কোনো কর্মচারী বা অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষক সম্পাদন করে থাকে। ব্যবসায়ের হিসাব, অর্থসংস্থান ও অন্যান্য কাজে এরূপ নিরীক্ষা অনুসরণ করা হয়।

৫. ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ

ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের দ্বারাও প্রতিষ্ঠানের কার্য নির্ধারণ করা যায়। প্রতিষ্ঠানের নিম্নস্তরের নির্বাহীরা ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অধস্তনদের কাজের ভুল-ত্রুটি নির্ণয় করেন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করেন।

৬. তথ্য প্রযুক্তি

নিয়ন্ত্রণের একটি আধুনিক কৌশল বা উপায় হলো তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সুষ্ঠু তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যের পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়।

৭. গ্যান্ট চার্ট

Henry L. Gantt নামক একজন ব্যবস্থাপনা বিশারদ সময় ও ঘটনা নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণের যে চার্ট তৈরি করেন তাই গ্যান্ট চার্ট। এটি পরিকল্পনা মোতাবেক সঠিক সময়ে সঠিক কার্য সম্পাদনের নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করে। এ কারণে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

৮. পার্ট (PERT)

এটি হলো একটি কার্যপ্রণালি মূল্যায়ন কৌশল। এ কৌশলের দ্বারা কাজের বিভিন্ন অংশের সময় ও ব্যয়ের সনাক্তকরণ এবং মূল্যায়ন করা হয়। ফলে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কার্য সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

আরও পড়ুন:   নিয়ন্ত্রণ কি বা কাকে বলে? নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব আলোচনা কর।

৯. সমচ্ছেদ বিন্দু বা ব্রেক ইভেন বিশ্লেষণ

এটি একটি রেখাচিত্র পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আয় ও ব্যয়ের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়। সমচ্ছেদ বিন্দু হচ্ছে সেই বিন্দু যেখানে আয় ও ব্যয় সমান হয়। এটি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি।

১০. প্রোগ্রাম বাজেটিং

বৃহৎ উৎপাদনমূলক প্রতিষ্ঠানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রণের কৌশল । এ ধরনের বাজেট দ্বারা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্ত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। এতে মুনাফার সাথে ব্যয়ের বিষয়টি সঠিক আছে কিনা তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

উল্লিখিত কৌশলগুলো ছাড়াও তথ্য বিশ্লেষণ, কম্পিউটারের ব্যবহার, কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তিরস্কার ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত স্থাপন, স্থায়ী নিয়ম প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ কার্য সম্পাদন করা হয়ে থাকে।

Related Posts