Home » লিখিত যোগাযোগ কি? লিখিত যোগাযোগের মাধ্যম কি কি?
লিখিত যোগাযোগ কি

লিখিত যোগাযোগ কি? লিখিত যোগাযোগের মাধ্যম কি কি?

by Susmi
0 comment

লিখিত যোগাযোগ

আধুনিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে লিখিত যোগাযোগ অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। লিখিতভাবে যখন কোনো যোগাযোগ রক্ষা করা হয় তখন তাকে লিখিত যোগাযোগ বলে। ব্যবস্থাপকগণ আদেশ, উপদেশ, নির্দেশ লিখিতভাবে কর্মচারীদের কাছে প্রেরণ করে। অন্যদিকে অধস্তন কর্মচারীরাও তাদের সমস্যা, মতামত, অনুভূতি লিখিতভাবে ব্যবস্থাপক বা নির্বাহীদের কাছে প্রেরণ করে। এগুলো লিখিত যোগাযোগের মধ্যে পড়ে।

কাজেই আমরা বলতে পারি যে, কোনো সংবাদ, তথ্য, মনোভাব, মতামত, অনুভূতি যখন কাগজে কলমে লিখিতভাবে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে লিখিত যোগাযোগ বলে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি-যা সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে, সেখানে এ পদ্ধতি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন:   মৌখিক যোগাযোগ কি? মৌখিক যোগাযোগের উপায়গুলি কি কি?

লিখিত যোগাযোগের মাধ্যম বা উপায়

লিখিত যোগাযোগের মাধ্যম কি কি হতে পারে তা প্রধানত দু’দিক থেকে আলোচনা করা যেতে পারে। ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ থেকে আবার কর্মচারীদের দৃষ্টিকোণ থেকে। কারণ উভয়ের জন্য পৃথক পৃথক লিখিত মাধ্যম ব্যবহার করা হয়। এগুলো নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

১. ব্যবস্থাপনার জন্য লিখিত যোগাযোগ

নির্বাহী বা ব্যবস্থাপকগণ যখন তথ্য বিনিময়ে লিখিত ব্যবস্থা অবলম্বন করে তখন তাকে ব্যবস্থাপকীয় লিখিত যোগাযোগ বলে। এরূপ যোগাযোগের ব্যবস্থা কেবলমাত্র ব্যবস্থাপনা বা নির্বাহীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। নিচে এ ধরনের যোগাযোগের উপায়সমূহ আলোচনা করা হলো-

ক. বিশেষ ব্যবস্থাপনা বুলেটিন

অত্যন্ত জরুরি এবং সাময়িক কোনো বিষয়ের বিবৃতি প্রদানের জন্য এবং ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত সব সদস্যদের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের জন্য এ জাতীয় মাধ্যম অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

খ. সাংগঠনিক নীতি, পদ্ধতি ইত্যাদি

ব্যবস্থাপনার যাবতীয় নীতি, পদ্ধতি, কলাকৌশল বিজ্ঞপ্তি ও প্রশাসনিক কার্যসূচি লিখিতভাবে প্রকাশ করা হয়। এর ফলে অবিকৃতভাবে তা সংগঠনের নিম্নস্তর পর্যন্ত পৌঁছানো যায় এবং এর কপি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।

গ. ব্যবস্থাপনা সংবাদ চিঠি

এ ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাপকদের অবগত করানোর নিমিত্তে জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি চিঠির মাধ্যমে আদান-প্রদান রকা হয়। এরূপ চিঠি সাধারণত সপ্তাহান্তে বা মাসান্তে প্রকাশ করা হয়।

ঘ. আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা প্রতিবেদন

প্রধান নির্বাহীগণ উর্ধ্বমুখী যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপের নিমিত্তে ব্যবসায় পরিকল্পনা, সংগঠন, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণকল্পে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশের নির্দেশ দেন। যা লিখিত যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

২. কর্মচারীদের জন্য লিখিত যোগাযোগ

লিখিত যোগাযোগে কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কতিপয় উপায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিচে এসব উপায়সমূহের ওপর আলোচনা করা হলো-

ক. কর্মচারীদের জন্য সংবাদপত্র

সাধারণত কর্মীদের জন্য প্রকাশিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে প্রতিষ্ঠানের নীতি, পরিকল্পনা, উদ্দেশ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রম সম্পর্ক তথ্যাদি প্রকাশ করা হয়।

খ. কর্মচারী ইস্তেহার

কোনো জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অবগত করার উদ্দেশ্যে নির্বাহীগণ কর্মচারী ইস্তেহার প্রকাশ করেন। অনেক সময় তা ২/১ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তেহার বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়।

গ. মাসিক ঘরোয়া পত্রিকা

বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে অবগত করার নিমিত্ত মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করা হয়।

ঘ. প্রশ্ন বাক্স

বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নানা ধরনের অভাব-অভিযোগ এবং তথ্যাবলি সংগ্রহের সুবিধার্থে প্রশ্নপত্র তৈরি করে থাকে। এরূপ প্রশ্নপত্র কর্মীদের জন্য লিখিত যোগাযোগের একটি সহজ উপায় হিসেবে পরিচিত।

ঙ. অভিযোগ বই

এরূপ লিখিত যোগাযোগে কর্মীদের অভাব অভিযোগ এ সংক্রান্ত বইতে লিখিতভাবে জানাতে হয়। এধরনের অভিযোগ বই প্রত্যেক বিভাগে অথবা কেন্দ্রীয়ভাবেও রক্ষিত থাকতে পারে।

চ. বিশেষ প্রতিবেদন

প্রতিষ্ঠানের কোনো বিশেষ ঘটনা বা দুর্ঘটনা সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন রচনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে এসব প্রতিবেদন বিলি করা হয়ে থাকে।

এসব প্রধান প্রধান উপায় ছাড়াও আরো কতিপয় উল্লেখযোগ্য মাধ্যমে কর্মীদের সাথে লিখিত যোগাযোগ করা যায়; যেমন- নতুন কর্মচারীদের নিকট পত্র, কর্মচারীদের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি, কর্মচারীদের জন্য পুস্তিকা, উপদেশ পদ্ধতি, বেতন খাম, ইস্তেহার বোর্ড, রচনা প্রতিযোগিতা, বার্ষিক আর্থিক বিবরণী, অভ্যন্তরীণ প্রচারপত্র, স্মারকলিপি শ্রবণ ইত্যাদি।

 

Related Posts