Home » লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য গুলো আলোচনা কর
লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য

লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য গুলো আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য

লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগ প্রাচীনকাল থেকে যোগাযোগের প্রধান দুটি পদ্ধতি হিসেবে গণ্য। পৃথক পদ্ধতি হিসেবে লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে বেশকিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য গুলো আলোচনা করা হলো-

পার্থক্যের বিষয় মৌখিক যোগাযোগ লিখিত যোগাযোগ
১. সংজ্ঞাগত পার্থক্য কথাবার্তার মাধ্যমে যে যোগাযোগ করা হয় তাকে মৌখিক যোগাযোগ বলে। কাগজ, কলম, কালির দ্বারা ছাপানো অক্ষরে লিখে যে যোগাযোগ করা হয় তাকে লিখিত যোগাযোগ বলে।
২. সম্পর্ক স্থাপন এক্ষেত্রে যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষের মধ্যে সরাসরি কথা হয় ফলে উভয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। লিখিত যোগাযোগ হওয়ায় এক্ষেত্রে প্রত্যেক সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা কম থাকে।
৩. প্রমাণের সুযোগ মৌখিক যোগাযোগ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না বলে তা ভবিষ্যতে প্রমাণ করা কষ্টকর। লিখিত যোগাযোগ সর্বদাই সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় বলে তা প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করে।
৪. আনুষ্ঠানিকতা এরূপ যোগাযোগে আনুষ্ঠানিকতার প্রভাব কম থাকে। লিখিত যোগাযোগে আনুষ্ঠানিকতা তুলনামূলকভাবে অধিক।
৫. নমনীয়তা এরূপ যোগাযোগে সরাসরি বক্তব্য তুলে ধরায় তা সহজে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে উপস্থাপিত বক্তব্য সহজে পরিবর্তন করা যায় না বিধায় নমনীয়তা কম থাকে।
৬. মিতব্যয়িতা মৌখিক যোগাযোগে অর্থ ও সময় উভয়ই বাঁচানো সম্ভব হয়। এরূপ যোগাযোগে লক্ষ্য অর্জনে অর্থ ও সময় উভয়ই অনেক বেশি লাগে।
৭. বিকৃতির সম্ভাবনা এক্ষেত্রে তথ্যের বিকৃতির সম্ভাবনা বেশি থাকে। এক্ষেত্রে তথ্যের বিকৃতির তেমন কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
৮. ভাব প্রকাশের মাধ্যম মৌখিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মুখের ভাষা, কণ্ঠস্বর ইত্যাদির দ্বারা মনের ভাব বা বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। লিখিত যোগাযোগে খাতা-কলমে লিখিত বা মুদ্রিত আকারে প্রকাশ করা হয়।

সম্পর্কিত আর্টিকেল

লিখিত যোগাযোগ কি? লিখিত যোগাযোগের মাধ্যম কি কি?

মৌখিক যোগাযোগ কি? মৌখিক যোগাযোগের উপায়গুলি কি কি?

 

৯. প্রত্যুত্তর মৌখিক যোগাযোগের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রোতার প্রত্যুত্তর জানা সম্ভব হয়। লিখিত যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রোতার প্রত্যুত্তর পাওয়ার অবকাশ কম থাকে।
১০. বক্তব্য সংশোধন এর মাধ্যমে সংবাদ বা তথ্যের ভুল সাথে সাথে সংশোধন করা যায়। এক্ষেত্রে সংবাদ বা বক্তব্য বিষয়ে প্রেরকের ভুল সংশোধনের অবকাশ কম থাকে।
১১. গণ সংযোগের সুযোগ এরূপ যোগাযোগের মাধ্যমে একত্রে অনেক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে সহজে ব্যাপক জনসমষ্টির সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায় না। তা করতে গেলে ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
১২. গোপনীয়তা প্রকাশ কথা বলার সময়ে আবেগে গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।
১৩. দীর্ঘসূত্রতা এরূপ যোগাযোগের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ থাকায় যোগাযোগের লক্ষ্যার্জনে দীর্ঘসূত্রতার সযোগ থাকে না। এরূপ যোগাযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করা কষ্টকর। কারণ এক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা ও আমলাতান্ত্রিকতার প্রভাব বেশি থাকে।

অতএব, উপরে আলোচিত লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের পার্থক্য থেকে দেখা যায় যে, মৌখিক যোগাযোগ সহজ ও দ্রুত সংযোগ সাপেক্ষ। অন্যদিকে লিখিত যোগাযোগ স্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য প্রকৃতির।

Related Posts