দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলতে দুর্যোগ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তসমূহের সমষ্টি এবং এগুলোর প্রায়োগিক কার্যক্রমকে (প্রশাসনিক সকল স্তরের দুর্যোগ-পূর্ব, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী পর্যায়সমূহের) বুঝায়। অন্যভাবে বলা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এরূপ একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান যাতে যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং দুর্যোগে জরুরি সাড়াদান ও পুনরুদ্ধার ইত্যাদি কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকে।
অর্থকরী ফসল কাকে বলে? বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল কি কি? |
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ধাপসমূহ
১. দুর্যোগ প্রতিরোধ
৪. সাড়াদান
২. দুর্যোগ প্রশমন
৫. পুনরুদ্ধার
৩. দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি
৬. উন্নয়ন।
নিম্নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ধাপসমূহ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
১. দূর্যোগ প্রতিরোধ
দুর্যোগ-পূর্ব কার্যকলাপের ক্ষেত্রে, দুর্যোগকে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে সরকার ও জনগণের পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
২. দূর্যোগ প্রশমন
প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিয়ন্ত্রণ সীমিত, তাই প্রাকৃতিক দূর্যোগকে সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর ব্যাপারে প্রতিরোধ কার্যক্রম সুফল বয়ে আনতে পারে, প্রতিরোধ কার্যক্রম সুফল বয়ে আনতে পারে, যাকে দুর্যোগ প্রশমন বলে। সাধারণত দু’ভাবে দুর্যোগ প্রশমন করা যায়- কাঠামোগতভাবে ও অবকাঠামোগতভাবে।
৩. দূর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি
এটি দুর্যোগ-পূর্ব কার্যকলাপের শেষ ধাপ। আসন্ন দুর্যোগ হতে জনগণের জানমালের রক্ষা করাই হচ্ছে এ ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য। এক্ষেত্রে সরকারি, বেসরকারি ও নানা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। জনগণকে হুশিয়ারী ও সাবধানতা সংকেত প্রদানের মাধ্যমে এটি সম্পাদন করা যায়।
৪. সাড়াদান
দুর্যোগ সংগঠনের পরবর্তী ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ হচ্ছে সাড়াদান। দুর্যোগের সাথে সাথেই উপযুক্ত সাড়াদানের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ নিরাপদ স্থানে অপসারণ, তল্লাসি ও উদ্ধার, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমকে বুঝায়।
বাংলাদেশের শিল্পায়নের সমস্যাগুলো কি কি? |
৫. পুনরুদ্ধার
দুর্যোগে সম্পদ ও সম্পত্তি, পরিবেশ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ইত্যাদি অবকাঠামোর যে ক্ষতি হয়ে থাকে তা পুননির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনাকেই পুনরুদ্ধার বলে। এক্ষেত্রে সরকারি, বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থানসমূহের পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতার সমন্বয় প্রয়োজন।
৬. উন্নয়ন
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাকে দুর্যোগপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পর পরই ঐ এলাকার উন্নয়নের কাজে হাত দিতে হয়। উন্নয়ন কাজে হাত দেয়ার পূর্বে এলাকার ভৌগোলিক ও পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যের উপর নজর রাখতে হয়। এতে ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলার সুনির্দিষ্ট উপায় ত্বড়িৎ গতিতে অবলম্বন করা যায়।