Home » পরিকল্পনার গুরুত্ব আলোচনা কর
পরিকল্পনার গুরুত্ব আলোচনা কর

পরিকল্পনার গুরুত্ব আলোচনা কর

by Susmi
0 comment

প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের সফলাতা নির্ভর করে পরিকল্পনার ফলপ্রদতার উপর। পরিকল্পনার উপরই ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক পরিচালনা ও সাফল্য নির্ভর করে। তাই প্রিয় পাঠক, নিশ্চই বুঝতে পারছেন পরিকল্পনার গুরুত্ব নিয়ে আজকের আলোচনাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ! চলুন, তাহলে জেনে নিই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি।

পরিকল্পনার গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা

পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনাকে অনিশ্চয়তার মধ্যেও নিশ্চয়তার আশ্বাস প্রদান করে। পরিকল্পনা শুধু প্রতিষ্ঠানের দিক থেকেই নয়, সমাজের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পরিকল্পনার গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো-

১. উপকরণের কার্যকর ব্যবহার

যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জনে এতে নিয়োজিত মানবীয় ও বস্তুগত উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এরূপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আদর্শ পরিকল্পনা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে।

বিদ্যাকৌশল: লেখাপড়ায় সাফল্যের সহজ ফরমুলা: রাগিব হাসান - Bidya Kaushal: Lekhaporay Safolyer Sahoj Formula: Ragib Hasan

Save TK. 42 (14%)

২. উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা

পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। কার্যকর পরিকল্পনা উদ্দেশ্য অর্জনের পথ নির্দেশ করে। সে কারণে পরিকল্পাকে উদ্দেশ্য অর্জনের আলোকবর্তিকা হিসেবে অভিহিত করা হয়।

আরও পড়ুন:   

পরিকল্পনা কি বা কাকে বলে? একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

৩. দক্ষতা বৃদ্ধি

পরিকল্পনার অবর্তমানে কর্মীরা দক্ষতার সাথে কার্যাবলি পরিচালনা করতে পারে না। পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সুস্পষ্ট পথ নির্দেশনা দেয়। সঠিক নির্দেশনা পেয়ে কর্মীরা দক্ষতার সাথে নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

৪. সঠিক কার্যধারা অনুসরণ

পরিকল্পনার মাধ্যমে একাধিক বিকল্পের মধ্য হতে উত্তম বিকল্প বাছাইয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর পরিকল্পনার গুরুত্ব এখানেই। কারণ পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগ এবং তাদের সঠিক করণীয় কাজটি নির্ধারণ করা হয়।

৫. ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার বিপক্ষে রক্ষাকবচ

ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করে প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতির ধারা সুনিশ্চিতকরণে পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ এবং বিজ্ঞানসম্মত পূর্বানুমানের ভিত্তিতে পরিকল্পনা প্রণীত হয় বলে এটি আগামী দিনের সম্ভাব্য পরিবর্তনজনিত অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির বিপক্ষে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।

৬. ব্যয় ও অপচয় হ্রাস

আগে থেকে চিন্তা ভাবনা করে কাজ শুরু করা হলে সেক্ষেত্রে বাহুল্য ব্যয় অনেকাংশে হ্রাস পায়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সকল পর্যায়ে যদি বাজেট থাকে এবং বাজেটের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালিত হয় তবে মিতব্যয়িতা অর্জন সহজ হয়। এছাড়া জনশক্তি ও অন্যান্য উপকরণের অপচয় হ্রাস করতেও পরিকল্পনা সাহায্য করে।

৭. ভবিষ্যৎ দর্শন

পরিকল্পনাকে Looking Glass তথা ব্যবস্থাপনার দর্পণ হিসেবে অভিহিত করা হয়। পূর্বানুমানের ভিত্তিতে এবং অতীতের কার্যক্রমের ভিত্তিতে পরিকল্পনা তৈরি হয়। পরিকল্পনার সাহায্যে ভবিষ্যৎ কর্মসূচি এক পলকে অনুধাবন করা যায় বলে এটি ব্যবস্থাপনার সব পক্ষকে ভবিষ্যৎ দর্শনে সহায়তা করে।

৮. সৃজনশীল প্রতিভার উন্নয়ন

পরিকল্পনা একটি মননশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রক্রিয়া। বিভিন্ন বিভাগের নির্বাহীরা এটি প্রণয়নের সাথে জড়িত থাকেন বলে তারা একে সাফল্যমন্ডিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন। এতে তাদের মধ্যেও মননশীলতার পরিচর্যা হয় এবং সৃজনী প্রতিভা বিকাশ লাভ করে।

৯. ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজ বাস্তবায়ন

পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার সমুদয় কাজের ভিত্তিস্বরূপ। পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজ; যেমন- সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়, নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কার্য সঠিকভাবে সম্পাদন করা যায় না। তাই পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজের সঠিক বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

১০. ফলপ্রসূ নিয়ন্ত্রণ

নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন হয় পূর্ব নির্ধারিত আদর্শমান। এই আদর্শমানের সাথে প্রকৃত কার্যসম্পাদনের তুলনা করেই বিচ্যুতি খুঁজে বের করা হয়। পরিকল্পনার মাধ্যমেই কার্যসম্পাদনের আদর্শমান স্থির করা হয়। পরিকল্পনার অবর্তমানে নিয়ন্ত্রণের কোনো মাপকাঠি থাকে না। কাজেই নিয়ন্ত্রণের ফলপ্রসূতার দিক থেকে পরিকল্পনার গুরুত্ব অপরিসীম।

পরিশেষে বলা যায়, সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ব্যতিরেকে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব নয়। উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনাকে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সর্বোপরি সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রতিষ্ঠান, কর্মী, উৎপাদন পদ্ধতি প্রভৃতিকে গতিশীল ও দক্ষ করে তোলে।

Related Posts